ইসলামী বীমা কোম্পানির জন্য বিধিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
ইতোমধ্যে ‘ইসলামী বীমা বিধিমালা’ নামে একটি খসড়াও প্রস্তুত করেছে আইডিআরএ। খসড়া বিধিমালাটি চূড়ান্ত করতে স্টেকহোল্ডারদের মতামত আহবান করা হয়েছে।
রোববার (১০ মার্চ) এই সংক্রান্ত একটি চিঠি ইন্স্যুরেন্স একাডেমি, ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন ও ইন্স্যুরেন্স ফোরামসহ সকল লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চিঠিতে আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে নির্ধারিত দু’টি ই-মেইলে খসড়া বিধিমালার বিষয়ে মতামত পাঠাতে বলা হয়েছে।
আইডিআরএ’র পরিচালক (আইন) মোহা. আবদুল মজিদ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইসলামী বীমা বিধিমালার বিষয়ে কোন মতামত না পাওয়া গেলে এ বিষয়ে কারো আপত্তি বা মতামত নেই মর্মে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
বীমা খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বীমা খাতে ২০০০ সাল থেকেই পূর্ণাঙ্গ ইসলামী বীমা চালু হয়েছে। তখন থেকেই ইসলামী বীমা বিধিমালা থাকা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রায় দুই যুগ পরে এসে এই বিধিমালা প্রণয়নের চূড়ান্ত উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে দেরিতে হলেও কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত খুবই যুগোপযোগী।
তবে নতুন এই বিধিমালা সম্পর্কে স্টেকহোল্ডারদের মতামত দিতে আরো কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। কারণ, এক্ষেত্রে সেন্ট্রাল শরীয়াহ কাউন্সিলের মতামত নেয়া প্রয়োজন।
ইসলামী স্কলার ও ইসলামী অর্থনীতিবিদদের মতামতও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে যেসব দেশে ইসলামী বীমা চালু আছে তাদের মডেলগুলো দেখা প্রয়োজন। তাদের মতে, সময়ের প্রয়োজনে এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তাকাফুল বীমার একাধিক মডেল থাকা প্রয়োজন এই বিধিমালায়।
আইডিআরএ বলছে, দেশের বীমা খাতে ইসলামী বীমা ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য এই বিধিমালার নাম হবে- ‘ইসলামী বীমা বিধিমালা, ২০২৪’।
নতুন এই বিধিমালায়- ইসলামী বীমা ব্যবসা পরিচালনার অনুমতির জন্য আবেদন; ইসলামী বীমা ব্যবসায় পূরণীয় শর্তাবলী; ইসলামী বীমা ব্যবসার পদ্ধতি; ইসলামী বীমা পলিসি বা পরিকল্পসমূহ পূর্বানুমোদন; সলভেন্সি মার্জিন; পুনর্বীমা এবং প্রত্যর্পণ বীমা; শরীয়াহ কাউন্সিল; দাতব্য তহবিল; কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা ও নির্দেশনা প্রদানের এখতিয়ার ইত্যাদি বিষয় থাকছে।
এ ছাড়াও ইসলামী বীমা ব্যবসার পদ্ধতির বিষয়ে একটি তফসিল থাকছে, যেখানে ওয়াকালাহ-মুদারাবা মিশ্র (হাইব্রিড) পদ্ধতির বর্ণনা করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে ওয়াকালাহ-মুদারাবা মিশ্র পদ্ধতি সংক্রান্ত সংজ্ঞা; এই পদ্ধতির আওতায় দু’টি তহবিল সম্পর্কিত বর্ণনা; মুদারিবের দায়িত্ব ও কার্যাবলী; বীমা দাবি পরিশোধ; লাইফ ইসলামী বীমা ব্যবসার রিজার্ভ; উদ্বৃত্ত বন্টন; তাবাররু ও কর্জে হাসানা; মুদারিবের অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি বিষয় থাকছে তফসিলে।