পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সেহেরি গ্রহণ। সারাদিনের শক্তি সঞ্চয় ও পুষ্টির কথাটি মাথায় রেখে সেহেরিতে হালকা ও সহজপাচ্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবারই খাওয়া উচিত। সেহরির খাবার মুখরোচক, স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনি সহজে যেন হজম হয় ও সারা দিন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে সে বিষয়গুলো দরকারি।
সেহরিতে যে খাবার খাওয়া অবশ্যই বর্জন করা উচিত- সে সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন বিআরবি হসপিটালের মেডিসিন কনসাল্টন্টে ডাক্তার মহিউদ্দিন আহমেদ। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
সেহরিতে কখনই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ভারি খাবার খাওয়া উচিত নয়। কেননা এটি পেট খারাপ করে দিতে পারে ।
সেহেরিতে যেকোনো রকম, শাক বা আঁশ জাতীয় সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত । আঁশ জাতীয় খাবার হজম হতে সময় নেয় এবং হজমে সমস্যা তৈরি করে গ্যাস সৃষ্টি করে থাকে যার ফলে সারাদিন পেট ভারী বা শ্বাস ভারীর অনুভূতি হতে পারে যা রোজা রেখে অস্বস্তিকর।
তেহারি, বিরিয়ানি, পোলাও, খিচুরি— এই জাতীয় গুরুপাক খাবারগুলো সেহরিতে একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। এসব খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে পেটে গ্যাস তৈরি করে। এছাড়া গুরুপাক খাবার খাওয়ার কারণে কোলেস্টোরেল বেড়ে গেলে কার্ডিওভ্যাস্কুলার সমস্যা শুরু হয় যার কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণের সময় প্রচুর লবণ দেওয়া হয়। তাই উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। সেহরিতে শুঁটকি মাছ রান্না ও ভর্তা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন,এটি আপনার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া যাদের কিডনিতে ক্যালসিয়াম পাথর হওয়ার ঝুঁকি আছে, তারাও শুঁটকি এড়িয়ে চলা উচিত।
প্যাক করা খাবার, নিমকি, আচার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, হিমায়িত খাবার, ক্যানের সুপ, ড্রেসিং, সস, স্ন্যাকস্ জাতীয় খাবার সেহেরিতে না খাওয়াই ভালো।
সেহরিতে মিষ্টি জাতীয় খাবারের কারণে বদহজম হয়। তাই এসময় মিষ্টি খাবার জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
কোল্ড ড্রিংকস আসলে অতিরিক্ত চিনি আর মিষ্টি ছাড়া কিছুই নয়। এছাড়া কোল্ড ড্রিঙ্ক দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে। তাই সেহরি খাওয়ার পর কখনোই সফট ড্রিঙ্ক খাওয়া উচিত নয়।
সেহরিতে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্যাসের সৃষ্টি করে। তাই ফাস্টফুড খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত।
অধিক লবণ জাতীয় তৈলাক্ত খাবার দিয়ে রান্না খাবার গুলো সেহরিতে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া খাবার সুস্বাদু করার জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্য যেমন-কেচাপ, সয়াসস, সালাদ বানানোর উপকরণ, আচার জাতীয় লবণাক্ত খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত।
সেহেরিতে কোনভাবেই বাসি খাবার খাওয়া উচিত নয়। এমনকি মুরগির মাংস রান্নার পরে নতুনভাবে গরম করে খেলেও একধরনের বিষাক্ত গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
সেহেরিতে শুকনো ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে তা শরীরকে পানিশূন্য করে। তাই এ ধরনের খাবার বর্জন করা ভালো।
সেহেরিতে চা বা কফির ক্যাফেইন দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে এবং এবং অবসন্ন-ভাব আনে। এতে করে আমরা অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ বোধ করি। সেহরিতে এজন্য অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
অর্থসংবাদ/এমআই