আন্তর্জাতিক
গাজায় বিমান থেকে ফেলা ত্রাণে চাপা পড়ে নিহত ৫
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে বিমান থেকে ফেলা ত্রাণের বাক্সের নিচে চাপা পড়ে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। শুক্রবার গাজার আল শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
গাজার আল শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ আল শেখ হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আহত ব্যক্তিদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের আল শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কয়েকটি উড়োজাহাজ থেকে আল শাতি শিবিরে ত্রাণভর্তি বস্তা পড়তে দেখেছিলেন বেশ কয়েক জন সাংবাদিক। তবে কোন দেশের উড়োজাহাজ থেকে সেগুলো ফেলা হয়, তা তারা নিশ্চিত হতে পারেননি।
গাজায় হামলার পাশাপাশি পুরো অঞ্চলটি অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটিতে খাবার, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসার সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণসামগ্রী ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশর। তবে গতকালের ত্রাণের চালানটি যুক্তরাষ্ট্র ফেলেনি বলে জানিয়েছে তারা
তুলনামূলক অকার্যকর এবং ব্যয়বহুল এই ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতির সমালোচনা করে আসছে গাজায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা গুলো।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
দ্বিতীয় দফা সুদহার বাড়ালো রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে সুদহার ১৮ থেকে বাড়িয়ে ১৯ শতাংশ করেছে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির এ আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়, পণ্য ও পরিষেবা উৎপাদনের ক্ষমতাকে অতিক্রম করে চলেছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা। এ কারণে চলতি বছরে দ্বিতীয়বারের মতো বাড়ল সুদহার। খবর আরটি।
বিবৃতিতে আরো বলা হচ্ছে, জুলাইয়ে চলতি বছরের জন্য ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে পূর্বাভাস ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত মাসে ভোক্তা মূল্যসূচক বেড়ে ৯ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা সরকারের লক্ষ্য ৪ শতাংশের দ্বিগুণেরও বেশি।
এর আগে জুলাইয়ে সুদহার ২০০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছিল রাশিয়া। ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাঁচ দফা সুদহার বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ থেকে ১৮ শতাংশে উন্নীত করা হয়।
অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী সভায় সুদহার আরেক দফা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এক কারণ হিসেবে ‘একগুঁয়ে মূল্যস্ফীতি চাপ’কে দায়ী করা হচ্ছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রাশিয়ায় মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো শুরু হয়নি।
সুদহার ২০ শতাংশ বা এর ওপরে উন্নীত হতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান এলভিরা নাবিউলিনা জানান, মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশে ফিরিয়ে আনতে ব্যাংক যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত।
এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) জিডিপি এবং জুলাই-আগস্টের অর্থনৈতিক সূচক বিশ্লেষণ করে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা মন্থর হয়েছে। এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে সীমিত সরবরাহ ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদার পতন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানে লিটারে পেট্রলের দাম কমলো ১০ রুপি
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম গত দুই সপ্তাহে কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির সরকার পেট্রলের দাম লিটারে ১০ রুপি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের অর্থ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পেট্রলিয়াম পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেছে তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
দেশটিতে পেট্রলের পাশাপাশি হাইস্পিড ডিজেলের দাম ২৬২ দশমিক ৭৫ রুপি থেকে কমিয়ে ২৪৯ দশমিক ৬৯ রুপি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতি লিটারে দাম কমানো হয়েছে ১৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
তাছাড়া কেরোসিনের দাম ১৬৯ দশমিক ৬২ রুপি থেকে কমিয়ে ১৫৮ দশমিক ৪৭ রুপি করা হয়েছে। লাইট ডিজেলের দাম ১৫৪ দশমিক শূন্য ৫ রুপি থেকে কমিয়ে ১৪১ দশমিক ৯৩ রুপি করা হয়েছে।
পেট্রল প্রধানত ব্যক্তিগত পরিবহন, ছোট যানবাহন, রিকশা ও দুই চাকার গাড়িতে ব্যবহৃত হয়। উচ্চ জ্বালানির দাম মধ্যম ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্যদের বাজেটকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে পরিবহনখাতের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উচ্চ গতির ডিজেলের ওপর নির্ভরশীল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মহাকাশে গবেষণা স্যাটেলাইট পাঠালো ইরান
মহাকাশে এবার একটি গবেষণা স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে ইরান। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চামরান-১ নামের স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এটা চলতি বছর উৎক্ষেপণ করা ইরানের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। পুরো বিষয়টির দেখভাল করেছে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) মহাকাশ বিষয়ক বিভাগ অ্যারোস্পেস ফোর্স।
আরও বলা হয়, মাত্র ৬০ কেজি ওজনের স্যাটেলাইটটি ঘায়েম-১০০ রকেটে করে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। এটাকে কক্ষপথের ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় (৩৪০ মাইল) স্থাপন করা হয়েছে। এর আগের স্যাটেলাইটটিও এই ঘায়েম-১০০ রকেটে করে পাঠানো হয়েছিল।
এই ধরনের উৎক্ষেপণের ব্যাপারে ইরানকে বারবার সতর্ক করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। তারা বলছে, একই প্রযুক্তি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। আর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
তবে ইরান বলছে যে, তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাচ্ছে না। তাদের স্যাটেলাইট ও রকেট উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বেসামরিক ব্যবহার বা প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশ্বের কোনো দেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকতে চায় না ইরান। সেই অঙ্গিকার থেকে দেশটি তার মহাকাশ গবেষণা ও কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমাদের প্রবল বিরোধিতার মুখেও পিছপা হচ্ছে না দেশটির সরকার। ইরানি কর্মকর্তারা জোর দিয়েই বলছেন, তাদের মহাকাশ কর্মকাণ্ড শান্তিপূর্ণ এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনা অনুসারেই চলছে।
তারই অংশ হিসেবে একের পর রকেট ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সবসময়ই যে উৎক্ষেপণ সফল হচ্ছে, তেমনটা নয়। সম্প্রতি তাদের বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরই বিস্ফোরিত হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সোরাইয়া নামে একটি স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ করে ইরান। এটি কক্ষপথের ৭৫০ কিলোমিটার (৪৬৫-মাইল) উচ্চতায় স্থাপন করা হয়, যা এখন পর্যন্ত কোনো দেশের জন্য সর্বোচ্চ।
এরপর ফেব্রুয়ারিতে কক্ষপথে একটি রিমোট সেন্সিং ও ইমেজিং স্যাটেলাইট স্থাপন করে ইরান। যা পাঠাতে সহায়তা করেছিল রাশিয়া। স্যাটেলাইটটি পাঠানোর পর যুক্তরাষ্ট্র এর নিন্দা জানায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
জর্ডানের নতুন প্রধানমন্ত্রী জাফর হাসান
সরকার ও মন্ত্রিসভার মেয়াদ পূর্ণ করে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাদশাহর কাছে অব্যাহতিপত্র জমা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিশের খাসাউনে। তিনি চিঠি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ তার নিজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা জাফর হাসানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
অব্যাহতিপত্র জমা দিলেও অবশ্য এখনই সরকারি দায়িত্ব পুরোপুরি বিদায় নিচ্ছেন না খাসাউনে। জর্ডানের সংবিধান অনুসারে, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগ পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন তিনি।
ভৌগলিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের দেশ জর্ডানে পার্লামেন্টারি সরকার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে ১৯২৯ সাল থেকে। তবে জর্ডানের সংবিধান অনুসারে বেশিরভাগ ক্ষমতা বাদশাহের হাতে রয়েছে। তিনি সরকারপ্রধান নিয়োগ এবং পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। সরকারি যে কোনা ইস্যুতে সিদ্ধান্তের ব্যপারে বাদশাহর মতামতকেই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয়।
জর্ডানের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নাম হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষের নাম সিনেট। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভিসের মোট আসনসংখ্যা ১৯৫টি এবং এই কক্ষের সদস্যরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। সিনেট সদস্যদের নিয়োগ দেন বাদশাহ।
সংবিধান অনুযায়ী দেশটির পার্লামেন্টের মেয়াদ ৪ বছর। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার নির্বাচনে হয়েছে জর্ডানে; সেই দিনই ঘোষণা করা হয়েছে ফলাফল। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে রোববার বাদশাহ বরাবর অব্যাহতিপত্র জমা দেন বিশের খাসাউনে।
নতুন প্রধানমন্ত্রী জাফর হাসান যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। এতদিন তিনি টেকনোক্র্যাট মর্যাদায় বাদশাহ আবদুল্লাহর উপদেষ্টা ছিলেন। দেশে তার গ্রহণযোগ্যতাও ভালো।
তবে এমন এক সময়ে তিনি দেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন জর্ডান কঠিন সময় পার করছে। গাজা উপত্যকার অভিযান এবং পশ্চিম তীরে নিয়মিত ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাতের প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতির ওপর। গত বছর অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত পর্যটনে রীতিমতো ধস নেমেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে জর্ডানে প্রবৃদ্ধি ছিল শতকরা ২ শতাংশ। দেশটির ইতিহাসে বাৎসরিক নিম্নপ্রবৃদ্ধির অন্যতম নজির এটি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্বের শীর্ষ ১০ তেলের খনি কোনগুলো
জ্বালানি তেলের মজুতের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ স্থানে রয়েছে ভেনেজুয়েলায়। এরপর রয়েছে সৌদি আরব, কানাডা ও ইরানে। তবে প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্র। আবার তেলের বড় রপ্তানিকারক দেশ হলো সৌদি আরব। রাশিয়াও বড় তেল উৎপাদনকারী এবং অন্যতম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ।
তেলের খনি অবশ্য ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এসব খনির কোনো কোনোটি বিশাল, কোনোটি আবার একেবারে ক্ষুদ্র। বেশি ছোট খনিতে আবার তেল উত্তোলন বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হয় না। বড় তেলের খনি খুঁজে পেলে তা সেই দেশের অর্থনীতিকেই বদলে দিতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় খনিগুলোর বেশির ভাগই সেই সব দেশে অবস্থিত, যারা তেলের আন্তর্জাতিক বাজারেও গুরুত্বপূর্ণ।
দেখে নেওয়া যাক উৎপাদনের নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রথাগত তেলের ক্ষেত্র কোনগুলো:
১. গাওয়ার তেলক্ষেত্র, সৌদি আরব
এটি দেশটির পূর্ব প্রদেশে অবস্থিত। এই খনিটি লম্বায় ২৮০ কিলোমিটার ও চওড়ায় ৩০ কিলোমিটার। ১৯৪৮ সালে গাওয়ার খনি আবিষ্কৃত হয়, আর এটি উৎপাদনে যায় ১৯৫১ সালে। সৌদি আরামকো এটির মালিক। গাওয়ার খনি থেকে প্রতিদিন ৫০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। এই খনিতে তেলের সম্ভাব্য মজুত ৭ হাজার ১০০ কোটি ব্যারেল।
২. অসবার্গ, নরওয়ে
এটি উত্তর সাগরে অবস্থিত একটি তেল খনি, যার ওপরে অংশ রয়েছে গ্যাস ক্ষেত্র। নরওয়ের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলীয় বার্জেন শহরের ১৪০ কিলোমিটার উত্তর–পশ্চিমে এটির অবস্থান। নবম শতকের একটি ভাইকং জাহাজের নামে এই খনিটির নামকরণ করা হয়েছে, আবিষ্কার করা হয়েছে ১৯৭৯ সালে। এটি থেকে প্রতিদিন ৩০ লাখ ৭৮ হাজার ব্যারেল তেল উত্তোলন করা যায়। এই খনির মূল পরিচালনাকারী কোম্পানি হলো স্টেটঅয়েল। সঙ্গে রয়েছে পেটোরো, টোটাল, এক্সমোবিল ও কনোকোফিলিপস।
৩. বলিভার কোস্টাল ফিল্ড, ভেনেজুয়েলা
দেশটির ভুখণ্ডে এই তেল ক্ষেত্রের আবিষ্কার হয় ১৯১৭ সালে আর উৎপাদনে যায় ১৯২২ সালে। দক্ষিণ আমেরিকায় এটি সবচেয়ে বড় তেলক্ষেত্র, যেখানে কূপের সংখ্যা ৭ হাজার। লেক মারাকাইবোর ৩৫ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে এগুলোর অবস্থান। এই তেলক্ষেত্রে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি ব্যারেল তেল আছে বলে ধারনা করা হয়। উৎপাদন সক্ষমতা প্রতিদিন ২৬ লাখ ব্যারেল।
৪. ফিউদোরোভস্কোই ফিল্ড, রাশিয়া
পশ্চিম সাইবেরিয়ায় সেন্ট পিটার্সবার্গের দক্ষিণে এই তেলক্ষেত্রের অবস্থান। আবিষ্কার হয়েছে ১৯৭১ সালে। এই খনির মজুত এখন অনেকটাই কমে গেছে। তবে এখনো এটি থেকে ১৯ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদিত হয়।
৫. বুরগান ফিল্ড, কুয়েত
এই তেল ক্ষেত্রের খোঁজ পাওয়া যায় ১৯৫৭ সালে। কুয়েতের দক্ষিণ মরুভূমিতে এর অবস্থান। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্যান্ডস্টোন তেলের খনি বলে বিবেচিত। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকি সেনারা পালিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে এই তেলক্ষেত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে ওই ঘটনায় এটির বড় রকমের কোনো ক্ষতি হয়নি বা মজুত কমেনি। বুরগান ক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন ১৭ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়। সম্ভাব্য মজুত ৪ হাজার ৪০০ কোটি ব্যারেল।
৬. রুমাইলা তেলক্ষেত্র, ইরাক
১৯৫৩ সালে এই তেলের খনি আবিষ্কৃত হয়। এটির মালিক দেশটির সরকার হলেও বিপি বা ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম ও চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কাছে ইজারা দেওয়া আছে। বর্তমানে রুমাইলা ক্ষেত্র থেকে ১৩ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়। এটির সম্ভাব্য মজুত ১ হাজার ৭০০ কোটি ব্যারেল। রুমাইলা তেলক্ষেত্রে কূপের সংখ্যা ২৭০টি। আগামী দিনে উৎপাদনক্ষমতা ২১ লাখ ব্যারেলে বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
৭. সামোতলর ফিল্ড, রাশিয়া
লেক সামোতলর এলাকায় ১ হাজার ৭৫২ বর্গকিলোমিটারজুড়ে এর অবস্থান। আকারের দিক থেকে এই তেলক্ষেত্র রাশিয়ার সবচেয়ে বড়। ১৯৬৫ সালে এটি খুঁজে পাওয়া যায় আর এটি উৎপাদনে যায় ১৯৬৯ সালে। বর্তমানে এই খনি থেকে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়। সম্ভাব্য মজুত ৪০০ কোটি ব্যারেল। উৎপাদন শুরুর পর এই খনি থেকে ২৬০ কোটি টন তেল উত্তোলন করা হয়েছে।
৮. প্রিবস্কোই ফিল্ড, রাশিয়া
পশ্চিম সাইবেরিয়ার ৫ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারজুড়ে এই বিশাল তেলক্ষেত্রের অবস্থান। আবিষ্কার হয় ১৯৮২ সালে আর এটি উৎপাদনে আসে ২০০০ সালে। গাজপ্রম নেফট ও রসনেফট যৌথভাবে এটির মালিক ও পরিচালনা করে। বর্তমানে এই তেলক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন ৬ লাখ ৮৪ হাজার ব্যারেল তেল উত্তোলন হয়।
৯. প্রুডহো বে, যুক্তরাষ্ট্র
আলাস্কার নর্থ স্লোপে ২ লাখ ১৩ হাজার ৫৪৩ একরজুড়ে এটির অবস্থান। এই তেলক্ষেত্র যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশে সবচেয়ে বড়। ১৯৬৮ সালে এটি আবিষ্কৃত হলেও উৎপাদনে আসে ১৯৭৭ সালে। বিপি পরিচালিত এই খনিতে অন্য অংশীদার হলো এক্সনমবিল ও কনোকোফিলিপস আলাস্কা। প্রতিদিন ৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল তেল উত্তোলন হয় এখান থেকে। আর সম্ভাব্য মজুত ২ হাজার ৫০০ কোটি ব্যারেল।
১০. মাজনুন তেলক্ষেত্র, ইরাক
দক্ষিণ ইরাকের বসরা শহরের কাছে এই খনির অবস্থান। বিশ্বে যেসব খনি তেলে একেবারে পরিপূর্ণ, সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে মাজনুন তেলক্ষেত্র। এটির সম্ভাব্য মজুত ১ হাজার ২৬০ কোটি ব্যারেল। ১৯৭৫ সালে ব্রাজিলের কোম্পানি ব্রাসপেট্রো এটি আবিষ্কার করে। মাজনুন শব্দের অর্থ হলো পাগলাটে। প্রতিদিন এই ক্ষেত্র থেকে ৫ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়।