চলতি বছর চীনে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রমালিকানাধীন চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অর্থনীতি ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালে চীন ৭ কোটি ৭১ লাখ ১০ হাজার টন বা দৈনিক ১০ হাজার ৬৪০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানি করতে পারে।
২০২৩ সালে চীন ৭ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। চলতি বছর বাড়লেও তা ইউক্রেন যুদ্ধপূর্ব অবস্থায় ফিরবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে চলতি বছর পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশটির গ্যাস আমদানি ৮ দশমিক ২ শতাংশ বাড়ার প্রত্যাশা রয়েছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দৈনিক ৭ হাজার ২৬০ কোটি ঘনফুটে।
দেশটিতে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে অর্থনীতি ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট। সে হিসেবে উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪ হাজার ৫৮০ কোটি ঘনফুটে। ২০২৩ সালে উত্তোলন করা হয়েছিল ২৩ হাজার ৫৩০ কোটি ঘনফুট, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। চলতি বছর দেশটিতে গ্যাসের চাহিদা ৬ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪০০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে। ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩৯ হাজার ৪৫৩ কোটি ঘনফুটে।
অর্থনীতি ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট জানায়, চীনে সাম্প্রতিক সময়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। বিশেষ করে গত বছরের প্রথম আট মাসে এ খাতে জ্বালানিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চলতি বছরও এ খাতে চাহিদা প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের বৈশ্বিক দাম ২০২২ সালে বেড়ে ইতিহাসের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এতে চাহিদায় ধস নেমেছিল। তবে গত বছর জ্বালানিটির বাজারদর কমেছে লক্ষণীয় মাত্রায়। এতে চাহিদা ফের ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। চলতি বছর এটির চাহিদা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। তবে এটির সরবরাহ এখনো সংকোচনের মুখে আছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সংস্থাটি জানায়, এশিয়া প্যাসিফিকের দ্রুতবর্ধনশীল বাজারগুলোয় চাহিদা প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত শক্তিশালী হবে বলে প্রত্যাশা। এছাড়া আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের গ্যাসসমৃদ্ধ দেশগুলোয়ও জ্বালানিটির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।