অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে গত দুই দিনে রাজধানীতে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৫৬২টি অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার (৪ মার্চ) রাত পর্যন্ত এসব অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৪৫৫টি হোটেল-রেস্তোরাঁ, ১০৪টি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার দোকান ও ৩টি কেমিক্যাল গোডাউনে এ অভিযান চালানো হয়।
অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার জানান, ডিএমপির রমনা বিভাগে ১১০টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ৮৪টি ও ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান ২৬টি। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন বা মামলা হয়েছে ২৭টি।
লালবাগে ৩৫টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় প্রসিকিউশন বা মামলা হয়েছে ৩৪টি। ওয়ারীতে ৪১টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ৩৯টি, ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান ১টি ও একটি কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে প্রসিকিউশন বা মামলা হয়েছে ১৫টি।
মতিঝিল বিভাগে ১০৮টি প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ১০৩টি হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকানে অভিযান চালানো হয়। ওইসব প্রতিষ্ঠানের নামে প্রসিকিউশন বা মামলা হয়েছে ২৯টি।
তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালানো হয় ৭৪টি প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে ৬৪টি হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান। এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রসিকিউশন বা মামলা দেওয়া হয়েছে ৩১টি।
একইভাবে মিরপুর বিভাগে ৪২টি প্রতিষ্ঠানে অভিযানে ৩৪টি হোটেল-রেস্তোরাঁয়, ৭টি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান ও ১টি কেমিক্যাল গোডাউনের বিরুদ্ধে ২৭টি প্রসিকিউশন বা মামলা দেওয়া হয়েছে।
গুলশান বিভাগে ৩০টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে ২৩টি হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ৭টি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান। এতে প্রসিকিউশন বা মামলা হয়েছে ১৮টি।
এ ছাড়া ডিএমপির উত্তরা বিভাগে ১২২টি প্রতিষ্ঠানের ৭৩টি হোটেল-রেস্তোরাঁ, ৪৮টি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান ও একটি কেমিক্যাল গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন বা মামলা দেওয়া হয়েছে ৪৮টি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়ে এখনও ১১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
গ্রিন কোজি কটেজ নামে ৭ তলা ওই ভবনের একটি তলা ছাড়া বাকি সবকটি তলায় ছিল রেস্তোরাঁ। ভবনটিতে ছিল না জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি, তার ওপর ভবনের মূল সিঁড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা ছিল গ্যাসের সিলিন্ডার। ফলে আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে তা। আর মর্মান্তিক এক ঘটনার সাক্ষী হয় দেশবাসী।
এ ঘটনার পরই রেস্তোরাঁ ও ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি আবার সামনে আসে। এরই প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।