ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

যেসব কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে গেল আরও ৬ কোম্পানি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ কোম্পানির শেয়ার আগামীকাল সোমবার (০৪ মার্চ) থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এজিএম করতে ব্যর্থ, ৬ মাসের বেশি সময় উৎপাদন বন্ধসহ বেশকিছু কারণে এসব কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, যেসব কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হয়েছে, একইসঙ্গে অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ডিএসই। তার মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ৬ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই। ফলে আগামীকাল সোমবার থেকে যে ৬ কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে। তার মধ্যে বস্ত্র খাতের ২টি, ঔষধ ও রসায়ন খাতের ২টি, আর্থিক খাতের ১টি এবং বিমা খাতের ১টি কোম্পানি।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে- প্রাইম টেক্সটাইল, প্রাইম ফাইন্যান্স, নিউ লাইন ক্লোথিংস, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এএফসি এগ্রো বায়োটেক এবং এক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস লিমিটেড। এর আগে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২২ কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। আগামীকাল নতুন করে আরও ৬টি এ শ্রেণিভুক্ত হলে তাতে ডিএসইতে জেড শ্রেণির কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৫৫টিতে।

জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনলে বিনিয়োগকারীদের ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ, দুর্বল কোম্পানি হিসেবে পরিচিত এসব কোম্পানির শেয়ার কিনলে কোন ধরনের ঋণ সুবিধা পাওয়া যায় না। একইসাথে এসব কোম্পানিকে কোন প্রকারের ঋণ সুবিধা না প্রদানে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজকে নির্দেশনা দিয়েছে ডিএসই। এছাড়া এসব কোম্পানির লেনদেনও বেশ সময়সাপেক্ষ। ফলে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকেনা।

এদিকে, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ফেরাতে দুর্বল কোম্পানিগুলোকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের বিষয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কড়া নির্দেশনা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, কোন কোম্পানি লভ্যাংশ প্রদান ও এজিএম করতে ব্যর্থ হলে তাকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। এ নির্দেশনা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে বলে জাননো হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ ঘোষণায় ব্যর্থ হলে তাকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। একইসাথে কোন আইনি কারণ ছাড়া টানা দুবছর বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম করতে ব্যর্থ হলেও কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন করে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানো হবে।

উৎপাদনহীন কোম্পানি নিয়েও কড়া নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। এখন থেকে কোন কোম্পানি টানা ৬ মাস তার কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকলে বা উৎপাদন বন্ধ রাখলে সেটিকেও জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি কোন কোম্পানির টানা দুই বছর ক্যাশ ফ্লো নেতিবাচক আসলে এবং পরিশোধিত মূলধনের থেকে ঋণ বেশি হলে তাকেও স্থান দেওয়া হবে জেড ক্যাটাগরিতে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোন কোম্পানি সিকিউরিটিজ আইন, বিধি-বিধান, বিজ্ঞপ্তি, আদেশ কিংবা নির্দেশাবলী পালনে ব্যর্থ হলে বা অসম্মতি জানালে সেটিকেও কমিশনের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে জেড ক্যাটাগরিতে সমন্বয় করা হবে।

নিয়মানুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বিমা এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া যেকোন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ (স্টক/বোনাস শেয়ার ব্যতীত) প্রদান করতে পারে। নতুন নিয়ম মোতাবেক, কোম্পানির ক্যাটাগরি নির্ণয়ে অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ বিবেচনা করা হবে।

এছাড়া, ব্যাংক, বিমা এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোন কোম্পানি যদি ইতোমধ্যে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়, তবে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালক কমিশনের পূর্বানুমোদন ছাড়া কোম্পানিটির কোন শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় বা স্থানান্তর করতে পারবে না বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির ঐ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার