রোহিঙ্গাদের জন্য ৬৫ কোটি ডলার অনুদান নিয়ে আলোচনা করেছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যানা বেজার্ড। দুটি প্রকল্পের আওতায় এই অর্থায়ন করা হবে। অর্থায়নের প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যবহার করা হবে এবং পুরোটাই অনুদানের শর্তে। প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৬৬ পয়সা হিসাবে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ১২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
আজ রবিবার সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা প্রয়োজন। বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের অবস্থা অর্জনে সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংকের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন সংস্থাটির এমডি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অ্যানা বেজার্ড।
বিশ্বব্যাংক এমডি বলেন, দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থাকবে। তবে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে আর্থিক খাতের সংস্কার জরুরি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে দাবি করে বেজার্ড বলেন, আর্থিক ও রাজস্ব নীতিতে দ্রুত এবং সাহসী সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, আর্থিক খাতের ঝুঁকি কমাতে এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন অ্যানা। তিনি বলেন, আজ প্রায় শতভাগ ছেলে-মেয়ে স্কুলে যায়। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বিদ্যুৎ রয়েছে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এবং সেই সঙ্গে স্বাগতিক সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
অ্যানা বেজার্ড বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্বের জন্য আমি খুবই গর্বিত। এটি লাখো মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সাহায্য করেছে। আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শক্তিশালী বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং জলবায়ু মোকাবিলায় কাজ করেছি। ভবিষ্যত সংকট মোকাবিলায় ও টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবো এবং একই সঙ্গে কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ছিল অন্যতম। দেশ স্বাধীনের পর বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৪১ বিলিয়নের বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ঋণের বেশিরভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণ। বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) সমর্থিত বৃহত্তম কর্মসূচি চলমান।