সারা দেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি মুসলমানরা শবে বরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। এ রাতটি ‘লাইলাতুল বরাত’ হিসেবেও পরিচিত।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষ্যে আগামী সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরকারি ছুটি থাকবে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষিতে আসন্ন পবিত্র রমজানে সমাজের অসহায়, দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আর কিছু দিন পরই আসছে পবিত্র রমজান মাস। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি। এ প্রেক্ষিতে সমাজের অসহায়, দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসতে আমি বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। পরম করুণাময় সব সংঘাত-সংকট থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করুন।’
রাষ্ট্রপতি পবিত্র শবেবরাত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত মহিমান্বিত ও বরকতময় এক রজনী উল্লেখ করে দেশবাসীসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়েছেন।
অপর এক পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র শবেবরাতের মহাত্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবকল্যাণ ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আসুন, সকল প্রকার অন্যায়, অনাচার, হানাহানি ও কুসংস্কার পরিহার করে আমরা শান্তির ধর্ম ইসলামের চেতনাকে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সকল স্তরে প্রতিষ্ঠা করি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র শবেবরাত রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। পবিত্র এই রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। অর্জন করতে পারি তাঁর অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফেরাত।
প্রধানমন্ত্রী পবিত্র এই রজনীতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও মুসলিম জাহানের উত্তরোত্তর উন্নতি, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেছেন।
এ রাতে বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে মসজিদে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
পবিত্র শবে বরাত ১৪৪৫ হিজরি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ওয়াজ, দোয়া মাহফিল, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, হামদ নাতসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার এ উপলক্ষ্যে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ‘পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত ও তাৎপর্য’ শীর্ষক ওয়াজ করবেন জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতী মোহাম্মদ রুহুল আমীন।
রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ‘পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে লাইলাতুল বরাতের শিক্ষা ও করণীয়’ শীর্ষক ওয়াজ করবেন মাদারীপুর জামেআতুছ সুন্নাহ শিবচরের মুহতামিম হযরত মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ ফরিদী।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ‘আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক ওয়াজ করবেন ঢাকার বাদামতলীর শাহাজাদ লেন জামে মসজিদের খতীব শায়খুল হাদিস মুফতী নজরুল ইসলাম কাসেমী। আর রাত ৩ টা ১৫ মিনিটে ‘নফল নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত’ শীর্ষক ওয়াজ করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতী মো. মিজানুর রহমান।
আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে ভোর সাড়ে ৫ টায়। মোনাজাত পরিচালনা করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতী মো. মিজানুর রহমান।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষ্যে ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলসহ এবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটাবেন।
মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মুসলমানরা বিশেষ মোনাজাত করবেন।