ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

শিল্পের মূলধনি যন্ত্রপাতিতে কমেছে এলসি নিষ্পত্তি

ডলারের অভাবে আমদানি কমার ধারা অব্যাহত আছে। এর প্রভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নতুন শিল্প স্থাপন ও উৎপাদন। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে এলসি নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ। এ সময়ে শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালে কমেছে প্রায় ২৮ শতাংশ। আর মূলধনি যন্ত্রপাতিতে কমেছে সাড়ে ২৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, শিল্প উৎপাদন, নতুন কারখানা স্থাপন ও বিনিয়োগের অবস্থা বোঝার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে কাঁচামাল ও মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি পরিস্থিতি দেখা। ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের জুলাই থেকে এলসি খোলায় কড়াকড়ি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাড়তি দর দিয়েও অনেকে এখন এলসি খুলতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ডলার সংস্থান ছাড়া ব্যাংকগুলোকে এলসি খুলতে নিষেধ করেছে। এর মধ্যে বিশ্ববাজারে সুদহার অনেক বেড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ছিল নানা অনিশ্চয়তা। ফলে ট্রেডিং খাতের প্রভাবশালীরা ছাড়া অন্যরা তেমন এলসি খুলতে পারেননি। যে কারণে নতুন শিল্প স্থাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ মূলধনি যন্ত্রপাতি এবং শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানির এলসি নিষ্পত্তি কমেছে সবচেয়ে বেশি হারে। যদিও কিছুটা আশার বিষয় হলো, অনেক দিন পর জানুয়ারিতে মূলধনি যন্ত্রপাতির জন্য নতুন এলসি খোলা বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি পর্যন্ত এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৩ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম। গত অর্থবছর এলসি নিষ্পত্তি কমেছিল ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ। গত জানুয়ারি পর্যন্ত ভোগ্যপণ্যের এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ। এলসি নিষ্পত্তি কমেছে মধ্যবর্তী পণ্যে ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, পেট্রোলিয়ামে ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্যে ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।

প্রথম সাত মাসে সব মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৯২৬ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম। গত অর্থবছর এলসি খোলা কমেছিল ৩১ দশমিক ১৯ শতাংশ। অবশ্য জানুয়ারি পর্যন্ত মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি খোলা বেড়েছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর অন্যান্য পণ্যের এলসি বেড়েছে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ডলার সংকট কাটাতে নানা উদ্যোগ নিলেও তেমন কাজ হচ্ছে না। আবার ডলারের দরও স্থিতিশীল হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো এখনও রেমিট্যান্স কিনছে ১২২ থেকে ১২৩ টাকা দরে। আর আমদানিকারকদের ১২৫ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনতে হচ্ছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় এখন ডলারের দর ঠিক করা আছে ১১০ টাকা।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার