জাতীয়
খেয়াল রাখতে হবে ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয়: রাষ্ট্রপতি
ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বিচারকদের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে দুদিনব্যাপী ‘একবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশিয়ার সাংবিধানিক আদালত: বাংলাদেশ ও ভারত থেকে শিক্ষা’ শীর্ষক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্ব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দায়িত্ব পালনের জন্য ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। আবার ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ক্ষমতার যেন অপব্যবহার না হয় সেদিকে কঠোরভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
বিচারকদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘দেশ-জনগণ ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
রাষ্ট্রপ্রধান আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিচার প্রার্থীরা অত্যন্ত কম খরচে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ন্যায় বিচার পাবেন এবং বিচারকরা তাদের মেধা ও মননশীলতার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন।’
দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বিচার বিভাগকে সামিল হতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন উল্লেখ করেন, ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তার যাত্রা শুরু করেছে ও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এটা মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প সময়ে বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ষড়যন্ত্রকারীদের সেই নীল নকশা বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের যেই বিচারপতি ও আইনজীবীরা বন্দুকের নলের কাছে নতি স্বীকার করেননি, বিবেককে কখনো বিকিয়ে দেননি তাদের ভূমিকা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
বাংলাদেশ ও ভারত দক্ষিণ এশিয়ার দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের উন্নয়ন ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় তাদের নিজ নিজ যাত্রায় অনন্য পথ অতিক্রম করেছে বলে তিনি জানান। বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশই এমন দৃষ্টান্ত প্রত্যক্ষ করেছে যেখানে বিচার বিভাগ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায়, পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং সুশাসনের নীতিগুলোকে সমুন্নত রাখতে হস্তক্ষেপ করেছে।
ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম দেশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ও সহমর্মিতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। দুদেশের বিচার বিভাগ, বিচারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের বিচার বিভাগ, বিচারক ও জনগণ উপকৃত হতে পারে বলে মত দেন তিনি।
বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবিধানিক আদালতগুলোকে মামলা জট নিরসন, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার এবং বিচারিক জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, দুদেশের বিচার বিভাগ বিচারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের বিচারক, জনগণ উপকৃত হতে পারে।
সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবিধানিক আদালতগুলোকে ন্যায়বিচারের প্রবেশ অধিকার ও বিচারের জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের উন্নয়নের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে ভারতের প্রধান বিচারপতি ড.ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় উপস্থিত হয়ে সম্মেলনকে আন্তর্জাতিক বহুমাত্রিকতা দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিসহ অন্যান্য সকল অতিথিদের স্বাগত জানান। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলকে সম্বিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ড. ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নেতা, সংসদ সদস্য ও বিজ্ঞ আইনজীবীরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই রূপরেখা প্রকাশ করবেন: প্রেস সচিব
শিগগিরই এই সরকারের রূপরেখা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার আজকের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই রূপরেখা প্রকাশ করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক, সংবিধান, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজকের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর নির্ভর করবে এই সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে। তবে কোনো দলই এই সরকারের মেয়াদ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।
দলগুলো রাষ্ট্র সংস্কারের স্বার্থে ধৈর্য ধরতে রাজি আছে বলে জানান প্রেস সচিব।
এর আগে, বিকেল ৩টা থেকে বিভিন্ন দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে অংশ নেন হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় পার্টি, গণফোরাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাসদসহ কয়েকটি দল।
এরও আগে, গত ২৯ আগস্ট মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশের পাশে ভালো বন্ধু হয়ে থাকবে ভিয়েতনাম: রাষ্ট্রদূত
ভিয়েতনাম-বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব বিকাশ লাভ করছে। ভিয়েতনাম সবসময় বাংলাদেশের ভালো বন্ধু হয়ে পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মান চুং।
ভিয়েতনামের সরকার এবং জনগণ সবসময় এটা হৃদয়ে রেখেছে যে, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত ভিয়েতনামের প্রতি যে অমূল্য সহায়তা করেছে, তা অত্যন্ত মূল্যবান।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ভিয়েতনামের ৭৯তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, আজকের এই দিনে ভিয়েতনামের মহান নেতা হো চি মিনকে আমি স্মরণ করছি। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে গত ৫ দশকে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আমি আশা করি, আগামী দিনেও গভীর বন্ধুত্ব অটুট থাকবে।
কৃষি ও প্রানিসম্পদ খাতে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে সহযোগিতার ওপর জোর দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মান চুং বলেন, ভিয়েতনাম-বাংলাদেশ জাতীয় বিনির্মাণ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক কিছুর মিল রয়েছে, যা উভয় দেশ পারস্পরিকভাবে শিখতে, প্রচার ও সমর্থন করতে পারে। উত্থান-পতনসহ দীর্ঘ ইতিহাসজুড়ে আমাদের সুখের অনুভূতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ঐতিহ্যগত বন্ধু হিসেবে ৫১ বছর ধরে দুই দেশ একাধিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করছে এবং ভালো অংশীদার হয়ে উঠেছে।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায়ই প্রতিনিধি বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৪ সালের শুরু থেকে রেল পরিবহন, শ্রম সুরক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অপ্রয়োজনীয় সম্ভাবনাগুলো অন্বেষণ করার জন্য মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সফরের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে উভয় দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিটি দেশের প্রার্থিতার পক্ষে পারস্পরিক সমর্থন বাড়িয়েছি। অর্থনীতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশই বছরের পর বছর ধীরে ধীরে প্রবৃদ্ধির সাক্ষী।
তিনি বলেন, গত বছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১.০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালের প্রথম ৭ মাসে আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ ৬৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। উভয় দেশের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাণিজ্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই বছরের আগস্ট মাসে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ৪২ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ভিয়েতনামে একটি কার্যকরী সফর করে। দূতাবাস ও মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় থাই বিন প্রদেশ এবং হো চি মিন সিটিতে বেশ কয়েকটি ফলপ্রসূ বিজনেস টু বিজনেস প্রোগ্রামে ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বন্যার্তদের পুনর্বাসনে পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে: দুর্যোগ উপদেষ্টা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, বন্যার্তদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারে কাছে পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে। আজ শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হবে। আগে ত্রাণ কার্যক্রমটা শেষ হোক, এটাই প্রথম।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে আমরা পর্যায়ক্রমে অ্যাড্রেস করছি। এরপরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জনস্বাস্থ্য।
উপদেষ্টা বলেন, সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হবে। যতদ্রুত সম্ভব স্থায়ী পুনর্বাসন যাতে আমরা শুরু করতে পারি। এখানে অনেক কিছু জড়িত। অর্থ ঋণদানকারী সংস্থাগুলো জড়িত আছে। ব্যাংক জড়িত আছে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো জড়িত আছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে। আমি টাকার অঙ্ক বলতে পারব না, তবে অভাব নাই।
ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, আমি যেখানে দেখেছি, সেখানে পানিবন্দি মানুষ এখনও রয়েছে। সেখানে শুকনো এবং রান্না করা খাবার বিপুল পরিমাণ মানুষ এখনও নিয়ে যাচ্ছে। এটা সত্য যে রাস্তা দুর্গম। এ সমস্ত অঞ্চলে নৌকার কালচার না থাকার কারণে নতুন করে দূর-দূরান্ত থেকে নৌকা, সেনা বাহিনীর বোট ইত্যাদি দিয়ে দূরবর্তী মানুষের কাছে যেতে সময় লেগেছে অনেক।
এসময় বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম বিভাগের সহ সমন্বয়ক খান তালত মাহমুদ রাফি উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভাইরাল ভিডিওর ভ্যানে লাশ তোলা পুলিশ কর্মকর্তা আ.লীগ নেতার ছেলে
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত রাস্তায় পড়ে থাকা লাশ একটি ভ্যানগাড়িতে স্তূপ করছে পুলিশ।
ভিডিওতে লাশের স্তূপ করতে ব্যস্ত এক পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়। তিনি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে। প্রায় দুই বছর আগে ঢাকা জেলার গোয়েন্দা বিভাগে যোগ দেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়াশোনা করেন।
আরাফাতের বাবা মো. আরিফ হোসেন বদরটুনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও হরিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে আরাফাতকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। আত্মগোপনে চলে গেছেন তিনি। তার মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে ভিডিওর চিত্রটির স্থান সম্পর্কে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এ ভিডিওটি সাভারের আশুলিয়া থানার।
এর আগে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সারা দিন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ভিডিওটি আশুলিয়া থানার সামনের ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে ধারণ করা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে আরাফাত হোসেন ফোন বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। ভিডিওতে থাকা অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। এর আগেই ভ্যানে লাশের স্তূপ করে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন তারা। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে।
ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে।
মহাসড়ক থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়ে এসবি অফিসের দিকে চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভেতরে ভিডিওতে থাকা বালুভর্তি বস্তাগুলো এসবি অফিসের দিকে যেতে থাকা ভবনের সামনে স্তূপ করা ছিল। কিন্তু থানা পরিষ্কারের সময় সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ড্রোন উড়িয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। তবে সেটি পুলিশের ড্রোন কি না তা জানি না। থানার বিভিন্ন গলিতে ছাত্র-জনতা প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পুলিশ লাশগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আরাফাতের ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর আরাফাত ভেঙে পড়েছে।
তিনি কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরাফাত এখনও অফিসে আসেনি। আমরা সেদিন ছাত্র-জনতার দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়িনি যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা সেদিন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফীর নির্দেশনা পালন করেছি।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীরা গত ৫ আগস্ট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন। পরে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবরে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানার দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ায় গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৭৫ জন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে ৪ শতাধিক মানুষ। যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
দখলদারিত্বের রাজনীতির পরিণতি ভালো হবে না: উপদেষ্টা আসিফ
চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের রাজনীতির পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ফেসুবকে আসিফ মাহমুদ লেখেন, চাঁদাবাজি আর দখলদারিত্বের রাজনীতির যে পুনর্বাসন হচ্ছে এর পরিণতি ভালো হবে না। জনমনে ক্ষোভের জন্ম দিয়ে কীভাবে নতুন বাংলাদেশের অংশ হবেন?
এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চাঁদাবাজদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। আপনাদের এলাকায় কেউ যদি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করতে আসে, তবে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। আজকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার মতো খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই বিজয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা চলছে বলে শঙ্কার কথা জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, আজকে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে আমাদের আলাদা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের লোকজনের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। নদীর বালুমহাল, মাছঘাট, লঞ্চ ও খেয়াঘাট এবং চরের জমি দখলের ঘটনা শুরু হয়।
কাফি