বিশ্বে তাপীয় কয়লা রফতানিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। চলতি বছরের প্রথম ২ মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশ থেকে জ্বালানিটির রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে। সে হিসেবে বছর শেষে রফতানি গত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।
বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়া নয় কোটি টনের ওপরে তাপীয় ও বিটুমিনাস কয়লা রফতানি করেছে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২৪ শতাংশ বেশি।
২০২৩ সালে দেশটি-এ যাবৎকালের সর্বাধিক কয়লা রফতানি করেছিল। রফতানির পরিমাণ ছিল ৫০ কোটি ৪৬ লাখ টন। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের মতো রফতানিতে যদি ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে এ বছরের শেষে রফতানি নতুন রেকর্ড স্পর্শ করতে পারে বলে জানিয়েছে কেপলার। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ইন্দোনেশীয় কয়লার শীর্ষ বাজার ছিল চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও ফিলিপাইন। এর মধ্যে মোট রফতানির ৩৩ শতাংশ চীনে, ১৫ শতাংশ ভারতে, ৫ দশমিক ৮ শতাংশ দক্ষিণ কোরিয়ায় ও ৫ দশমিক ১ শতাংশ ফিলিপাইনে সরবরাহ করা হয়েছে। গত বছরও এ পাঁচ দেশই ছিল ইন্দোনেশীয় তাপীয় কয়লার শীর্ষ গন্তব্য।
চলতি মাসের এখন পর্যন্ত চীনে ২১ কোটি ৯৪ লাখ টন তাপীয় কয়লা রফতানি করেছে ইন্দোনেশিয়া, যা আগের বছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় ৯ শতাংশ কম। তবে কেপলারের তথ্যমতে, ২ কোটি ১০ লাখ টন কয়লা জাহাজে লোডিং পর্যায়ে রয়েছে। এসব কয়লা কোন দেশে সরবরাহ করা হবে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে চীনই সম্ভাব্য গন্তব্য বলে মনে করছে বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে ফেব্রুয়ারির এখন পর্যন্ত ভারতে ১ কোটি ৩৫ লাখ টন তাপীয় কয়লা রফতানি করেছে ইন্দোনেশিয়া। ২০২০ সালের পর বছরের শুরুর দিকে দেশটিতে এত বেশি কয়লা আর কখনো রফতানি হয়নি। ২০২৩ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে মোট ১০ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টন তাপীয় কয়লা আমদানি করেছিল ভারত। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত আমদানি বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, জাপান ও মালয়েশিয়ায় রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এ মাসের শেষ দিকে রফতানি ফের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরতে পারে। এসব দেশে রফতানি প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।
আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে কয়লার সরবরাহ চাহিদার চেয়েও বেশি। তার ওপর এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় হিটিং জ্বালানি হিসেবে এর ব্যবহার কমেছে। উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোয় শীত শেষ হয়ে এলে তা আরো কমে যেতে পারে। বাড়তি সরবরাহের বিপরীতে ব্যবহার কমায় চলতি বছরজুড়ে তাপীয় কয়লার বৈশ্বিক দাম নিম্নমুখী থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কাফি