আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরস্পরকে আলিঙ্গন করার বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর দিক রয়েছে। আলিঙ্গনের সময় ‘অক্সিটোসিন’ নামক একটি হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা বিষণ্নতা, রাগ ও একাকীত্ব ইত্যাদি দূর করে মনে প্রশান্তি আনে। শুধু তাই নয়, উদ্বেগ কমানো থেকে শুরু করে আত্মিক সংযোগ তৈরি করতে পারে একটি আলিঙ্গন। অনেক আবেগ কিংবা না বলার কথার বিকল্পও হতে পারে এটি।
বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলো আলিঙ্গনের অনেক সুবিধার প্রমাণ পেয়েছে। এটি কেবল স্বাচ্ছন্দ্য, কর্টিসল, স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমায় না বরং ব্যথা উপশম করে এবং পেশী শিথিল করে। চলুন আলিঙ্গনের ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : কাউকে যখন আলিঙ্গন করা হয়, তখন ব্রেস্টবোনের উপর চাপ সৃষ্টি হয়, যা মনকে আবেগপূর্ণ করে তোলে। এটি প্লেক্সাস চক্রকেও সক্রিয় করে, যা থাইমাস গ্রন্থির কার্যকারিতাকে উদ্দীপিত করে। এই গ্রন্থি শরীরে শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
২. স্ট্রেস কমায়: আলিঙ্গন করটিসলের মাত্রা হ্রাস করে, এটি হলো স্ট্রেস হরমোন। করটিসলের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে চাপযুক্ত পরিস্থিতিতে রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন হ্রাস করে। আলিঙ্গন করলে তা রাতে ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করে। তাই প্রিয়জনকে আলিঙ্গন করুন। এটি দুজনের জন্যই ইতিবাচক।
৩. একাকিত্ব দূর করে: কাছের মানুষদের থেকে যত দূরে সরে যাবেন, নিজেকে তত বেশি একা ও নিঃসঙ্গ লাগবে। আলিঙ্গন মনে করিয়ে দেয় যে আমরা নিরাপদ, অন্যের কাছে প্রিয় এবং একা নই। তাই একাকিত্ব দূর করতে আলিঙ্গনের অভ্যাস করুন।
৪. ব্যথা দূর করে: শুধু মনের ব্যথা নয়, শরীরের ব্যথাও দূর করে আলিঙ্গন। এটি আপনার শরীরের ব্যথার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি করে। যে কারণ শরীরের উত্তেজনা হ্রাস হয়, যা উত্তেজনাপূর্ণ পেশীগুলোকে শিথিল করে।
৫. পেশীটান শিথিল করে: আলিঙ্গন ব্যথার বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি, রক্ত সঞ্চালনকেও উন্নত করতে সহায়তা করে। এমনকি এটি নরম টিস্যুগুলোতে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়, যা পেশী টানকে শিথিল করতে সহায়তা করে।
৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: প্রিয়জনদের আলিঙ্গন করলে শরীরে অক্সিটোসিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটি শরীর থেকে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যার ফলে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৭. ভয় দূর করতে সহায়তা করে: আলিঙ্গন উদ্বেগ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আলিঙ্গন মানুষের মন থেকে অস্তিত্বের ভয় দূর করতেও সহায়তা করে। তাই একাকিত্বের সময় কাউকে আলিঙ্গন করলে নিরাপত্তার অনুভূতি হয়।
৮. মন ভালো রাখে: ভালোবাসার মানুষকে জড়িয়ে ধরলে সেরোটোনিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন মেজাজ ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেরোটোনিনের বর্ধিত মাত্রা আপনার মেজাজকে উন্নত করে এবং মন খুশি রাখে।