পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধন ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করতে উদ্যোগ নেয় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। এজন্য কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যু করার পাশাপাশি মাগুরা পেপার মিলস লিমিটেডের সঙ্গে একত্রিতকরণ করে। একই সঙ্গে পরিশোধিত মূলধন ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে। তবে একীভূত হওয়ার পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর ক্রমান্বয়ে কমছেই। গত ৩১ জানুয়ারি একীভূত হওয়ার পর থেকে আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ১৪ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ২৭ শতাংশের বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কাগজ ও মুদ্রণ খাতের কোম্পানি পেপার প্রসেসিং মাগুরা পেপার মিলসের সঙ্গে একীভূতকরণের সিদ্ধান্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুমতি পান গত ৩১ জানুয়ারি। মাগুরা পেপার মিলসের সাথে একীভূত হতে শেয়ার ২:১ অনুপাতে বিনিময় করা হয়। অর্থাৎ মাগুরা পেপার মিলসের ২টি শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার। দুই কোম্পানি একীভূত হওয়ার পর থেকেই কোম্পানির শেয়ারের দাম কমছে। গত ৩১ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর ছিলো ১৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। আর আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শেয়ারটির দর কমে দাড়ায় ১৩২ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ মাত্র ১৪ কার্যদিবসে শেয়ারটির দর কমেছে ৫০ টাকা ৩০ পয়সা বা ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।
জানা গেছে, গত বছরের ২৬ আগস্ট পেপার প্রসেসিংয়ের পরিচালনা পর্ষদ বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) মাগুরা পেপার মিলসের একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। একীভূতকরণে কোম্পানিটি বিএসইসি ও হাইকোর্ট বরাবর আবেদন করে। গত ৩১ জানুয়ারি উভয় প্রতিষ্ঠান এই আবেদনে সম্মতি দেয় বলে ঢাকা স্টক একচেঞ্জকে জানানো হয়।
ডিএসই সূত্র মতে, দুই কোম্পানির একীভূতকরণে ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি স্পট মার্কেটে লেনদেন করে পেপার প্রসেসিং। এর জন্য গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির রেকর্ড ছিলো। রেকর্ড তারিখের পরেরদিনে একদিনেই কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ২১ শতাংশের বেশি। গতকাল রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিলো ১৬৮ টাকা ৩০ পয়সা। আর আজ বাজার শেষে শেয়ারদর দাড়িয়েছে ১৩২ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ একদিনে শেয়ারটির দর কমেছে ৩৫ টাকা ৭০ পয়সা বা ২১ দশমিক ২১ শতাংশ।
উল্লেখ্য, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯০ সালে। পরবর্তীতে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি অবনতির কারণে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে কোম্পানিটিকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক যুগ পর কোম্পানিটিকে মূল মার্কেটে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে ২০২১ সালের ১৩ জুন কোম্পানিটি মূল মার্কেটে লেনদেন শুরু করে। পেপার প্রসেসিংয়ের ৮ শতাংশ বোনাস শেয়ার ইস্যু করায় কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৬০ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮০ টাকা। আর বিএসইসির অনুমোদিত ১ কোটি ৮৩ লাখ ১৭ হাজার ৮১০টি শেয়ার একীভূত করার ফলে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৬০ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮ টাকায়। আর দুই কোম্পানির শেয়ার একত্রীকরণে পেপার প্রসেসিংয়ের মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৯৬ লাখ ০৩ হাজার ৩৭৮টি। মোট শেয়ারের মধ্যে ৩৫ শতাংশ উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এসএম