ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে পলিসির মধ্যে আনার তাগিদ ব্যবসায়ীদের

দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়ন ও সমন্বিতভাবে জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে স্বাস্থ্যসেবা পলিসির আওতায় নিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এফবিসিসিআইর হেলথকেয়ার, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল এন্ড নার্সিং ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির একটি সভায় ব্যবসায়ীরা এই বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এফবিসিসিআই’র বোর্ড রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্য খাত কতটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে সেটা আমরা সবাই দেখেছি। মহামারির শুরুতে এমন কথাও শুনতে হয়েছিলো যে, করোনায় বাংলাদেশে কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ মারা যাবে, দেশের অনেক ক্ষতি হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব আর স্বাস্থ্য খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগের কারণে সব আলোচনাকে দূরে ঠেলে দিয়ে করোনা মোকাবিলায় বিশ্বে দারুণ সুনাম কুঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এই খাতের উন্নয়নে এফবিসিসিআইর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, দেশে লাইসেন্সধারী হাসপাতালের পাশাপাশি লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে হাজারের বেশি। কিন্তু তারাও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। দেশের চিকিৎসা সেবা পরিসর ও এর মান বাড়াতে এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে নিয়মের মধ্যে আসতে হবে। এর পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসার খরচ কমানো ও বিদেশি রোগীদের চিকিৎসায় বাংলাদেশের মেডিকেল ও চিকিৎসা সেবার ব্র্যান্ডিং করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, দেশে কোভিড সময়ে স্বাস্থ্যখাতের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। করোনার সময়ে দেশে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের আরও উন্নয়ন করা গেলে দেশে চলমান ডলার সংকট অনেকখানি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি চিকিৎসার উচ্চ খরচ কমাতে হেল্থ ইনস্যুরেন্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান প্রীতি চক্রবর্তী।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান। তিনি বলেন, দেশে ১৭০ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে। এদের জন্য এখনও প্রচুর সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী দরকার। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় মফস্বলে আইসিইউ, ভেন্টিলেশন ইত্যাদি সংকট থেকে যায়। এ ব্যবস্থার ঢেলে সাজানোর দরকার।

দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে চিকিৎসা সেবাকে আস্থার জায়গায় পরিণত করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর পরিচালক সৈয়দ মো. বকতিয়ার। এছাড়া বিদেশ থেকে মেডিকেল যন্ত্রপাতি আমদানি কমিয়ে বিদেশ থেকে দক্ষ লোক এনে দেশে কারখানা প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিক ব্যবসায়ীরা জানান, জিআইএসহ আরো পরীক্ষিত মেডিকেল যন্ত্রপাতি আমদানি করতেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতি লাগে। অনুমতি পেতেও অনেক সময় দুই থেকে তিন মাস লেগে যায়। পরবর্তীতে পুনরায় সেই অনুমতি আছে কিনা তা যাচাই করা হয়। যা মালিকদের জন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করে।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, আলহাজ আজিজুল হক, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার