ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

২২ কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে আগামীকাল

আগামীকাল রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২২ কোম্পানির শেয়ার। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এজিএম করতে ব্যর্থ, ৬ মাসের বেশি সময় উৎপাদন বন্ধসহ বেশকিছু কারণে এসব কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, আগামীকাল রবিবার থেকে যে ২২ কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে তার মধ্যে বস্ত্র খাতের ৭টি, সিমেন্ট খাতের ১টি, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতের ১টি, আর্থিক খাতের ৫টি, আইটি খাতের ১টি, প্রকৌশল খাতের ৩টি, ঔষধ ও রসায়ন খাতের ১টি, কাগজ খাতের ১টি, খাদ্য খাতের ১টি এবং সিরামিক খাতের ১টি কোম্পানি।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে- অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আরামিট সিমেন্টস, আজিজ পাইপস, ডেল্টা স্পিনিং, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড, ইনটেক লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনল লিজিং, কেয়া কসমেটিকস, খুলনা প্রিন্টিং, ন্যাশনাল টি, প্রিমিয়ার লিজিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড, রিং শাইন টেক্সটাইল, সাফকো স্পিনিং, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ঢাকা ডাইং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ইয়াকিন পলিমার এবং জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

এর মধ্যে ডেল্টা স্পিনিং, কেয়া কসমেটিকস ও উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ। জিবিবি পাওয়ার, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল ও ইয়াকিন পলিমারকে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ। আর বাকি ১৫ কোম্পানির সম্পদের চেয়ে দায় বেশি থাকায় কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ফেরাতে পচা কোম্পানিগুলোকে জেড ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন বা স্থানান্তরের বিষয়ে কড়া নির্দেশনা দেয় নিয়ন্ত্রক বিএসইসি। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, কোন কোম্পানি লভ্যাংশ প্রদান ও এজিএম করতে ব্যর্থ হলে তাকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। এ নির্দেশনা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে বলে জাননো হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ ঘোষণায় ব্যর্থ হলে তাকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। একইসাথে কোন আইনি কারণ ছাড়া টানা দুবছর বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম করতে ব্যর্থ হলেও কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন করে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানো হবে।

উৎপাদনহীন কোম্পানি নিয়েও কড়া নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। এখন থেকে কোন কোম্পানি টানা ৬ মাস তার কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকলে বা উৎপাদন বন্ধ রাখলে সেটিকেও জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি কোন কোম্পানির টানা দুই বছর ক্যাশ ফ্লো নেতিবাচক আসলে এবং পরিশোধিত মূলধনের থেকে ঋণ বেশি হলে তাকেও স্থান দেওয়া হবে জেড ক্যাটাগরিতে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোন কোম্পানি সিকিউরিটিজ আইন, বিধি-বিধান, বিজ্ঞপ্তি, আদেশ কিংবা নির্দেশাবলী পালনে ব্যর্থ হলে বা অসম্মতি জানালে সেটিকেও কমিশনের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে জেড ক্যাটাগরিতে সমন্বয় করা হবে।

নিয়মানুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বিমা এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া যেকোন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ (স্টক/বোনাস শেয়ার ব্যতীত) প্রদান করতে পারে। নতুন নিয়ম মোতাবেক, কোম্পানির ক্যাটাগরি নির্ণয়ে অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ বিবেচনা করা হবে।

এছাড়া, ব্যাংক, বিমা এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোন কোম্পানি যদি ইতোমধ্যে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়, তবে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালক কমিশনের পূর্বানুমোদন ছাড়া কোম্পানিটির কোন শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় বা স্থানান্তর করতে পারবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

নতুন এই নির্দেশনার ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লেনদেনের নিষ্পত্তি) প্রবিধান, ২০১৩ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (লেনদেনের নিষ্পত্তি) প্রবিধান, ২০১৩ এর প্রবিধান নং ৫(২) এর বিধানগুলি রহিত হবে। এসব বিধানের জায়গায় আজকের নতুন নির্দেশনা কার্যকর হবে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার