ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের সম্পদ বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি পুঁজিবাজার

করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকায় প্রজন্ম বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের অনেক দ্রুত সম্পদ বেড়েছে। নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভের একটি জরিপ অনুযায়ী, ২০১৯ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক এবং ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের মধ্যে ৪০ বছরের কম বয়সী আমেরিকানদের মোট সম্পদ ৮০ শতাংশ বেড়ে সাড়ে ৯ লাখ কোটি ডলার হয়েছে। এ সম্পদ বৃদ্ধি পুরনো প্রজন্মের তুলনায় অনেক বেশি। ৪০-৫৪ বছর বয়সী আমেরিকানদের সম্পদ একই সময়ের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ বেড়েছে এবং ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের সম্পদ ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

জরিপ মতে, তরুণ প্রজন্মের জন্য সম্পদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চালিকা হিসেবে কাজ করেছে পুঁজিবাজার। ৪০ বছরের কম বয়সী আমেরিকানরা ২০১৯ সাল থেকে তাদের আর্থিক সম্পদ ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে। আর ৫৫ বা তার বেশি বয়সীরা সম্পদ ২০ শতাংশ বাড়াতে পেরেছে।

জরিপে জানানো হয়, মহামারী চলাকালীন তরুণ প্রজন্ম প্রচুর উদ্দীপনা পেয়েছে। তারা শেয়ার কেনার জন্য পুঁজি ব্যবহার করেছে। ৪০ বছরের কম বয়সীদের জন্য করপোরেট ইকুইটি (কোম্পানির মালিকানা) এবং মিউচুয়াল ফান্ড (স্টক, বন্ড ও স্বল্পমেয়াদি ঋণ) ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে আর্থিক সম্পদের ২৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। যার অবদান ২০১৯ সালে ছিল ১৮ শতাংশ। এটা অন্যান্য প্রজন্মের তুলনায় দ্রুততম বৃদ্ধি।

বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, অনূর্ধ্ব-৪০ গোষ্ঠীটি অন্যান্য প্রজন্মের তুলনায় ইকুইটি পোর্টফোলিওতে অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি করতে পেরেছে।”এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল আর্থিক সম্পদের শ্রেণী তৈরি করতে পেরেছে তরুণরা। তাদের আর্থিক সম্পদ ও সামগ্রিক সম্পদ বৃদ্ধি নতুন রেকর্ড করেছে।৷তরুণরা বয়স্কদের তুলনায় উচ্চ হারে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতে বিনিয়োগ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

একজন বিশ্লেষক জানিয়েছেন, প্রতিটি প্রজন্ম বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পদ বাড়িয়ে থাকে। এখনো ৪০ বছরের কম বয়সীরা অন্যান্য প্রজন্মের তুলনায় সবচেয়ে দরিদ্র। তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৯ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ৪০-৫৫ বছর বয়সীদের মোট সম্পদের (২৯ লাখ কোটি ডলার) একটি ভগ্নাংশ। আর ৫৫ বছরের বেশি বয়স্কদের সম্পদের পরিমাণ ১০৪ ট্রিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের সহযোগী অধ্যাপক রব গ্রুইজটারসের নেতৃত্বে করা একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩৫ বছর বয়সে বুমার প্রজন্মের (১৯৫৪-৬৪ সালের মধ্যে জন্ম) তুলনায় মিলেনিয়াল প্রজন্মের (১৯৮১-৯৬ সালের মধ্যে জন্ম) সম্পদের পরিমাণ ৩০ শতাংশ কম ছিল। ওই বয়সে বুমারদের হাতে ছিল ৬৩ হাজার ১০০ ডলার আর মিলেনিয়ালদের হাতে ছিল ৪৮ হাজার ডলার।

এখনো রিয়েল এস্টেট খাত অনেক মিলেনিয়াল ও জেনারেশন জেড (১৯৯৭-২০১২ সালের মধ্যে জন্ম) ক্রেতার নাগালের বাইরে। তবে এ দুই প্রজন্মের কাছে পুঁজিবাজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হয়ে উঠেছে। পুঁজিবাজার রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি চলে যাওয়ায় তরুণ ও বয়স্ক প্রজন্মের মধ্যে সম্পদের ব্যবধান ক্রমাগত কমতে থাকবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

জরিপে বলা হয়েছে, ‘‌আমরা দেখতে পেয়েছি তরুণদের মধ্যে দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধির ফলে গত চার বছরে বয়সভিত্তিক সম্পদের বৈষম্য কমেছে।’

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার