ক্যাটাগরি: শিল্প-বাণিজ্য

আসন্ন বাজেট নিয়ে ১৮০ প্রস্তাব চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের

বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব ও শিল্পবান্ধব করতে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিষয়ে মোট ১৮০টি প্রস্তাব দিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বাস্তবায়নের জন্য এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরে এখানকার ব্যবসায়ীদের দুই সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক প্রাক্-বাজেট আলোচনায় সংগঠন দুটি তাদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরে।

গতকাল আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু হলে চট্টগ্রাম চেম্বার এবং হোটেল আগ্রাবাদে মেট্রোপলিটন চেম্বারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

তিনি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে একই ধরনের দেশী ও বিদেশী শিল্প থাকলে দেশী শিল্পকে বেশি সুবিধা দেয়া যায় না। এটার সঙ্গে বিদেশী বিনিয়োগের বিষয়টি সম্পৃক্ত। তখন তারা বলবে এক দেশে দুই আইন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি থেকে ভারী শিল্পে মনোযোগ দিয়েছি, সাপোর্ট দিয়েছি। লোকাল রিসোর্স বাড়াতে চাই। কর নেটের আওতা বাড়াতে চাই। আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন চ্যালেঞ্জ আছে। লোকাল রিসোর্স মভিলাইজেশন করতে হবে।

সভায় এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রতি বছর আবাদি জমির ১ শতাংশ হারিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে সার, বীজ ও কীটনাশকে শূন্য শুল্কহার রেখেছি। কৃষি যন্ত্রপাতিতে শুল্কহার কম রাখা হয়েছে। মেশিনারি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এ সুবিধা নিয়ে বড় বড় শিল্প ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের শিল্প গড়ে উঠবে বলে আশা করে এনবিআর। দেশে মোবাইল ফোন, রেফ্রিজারেটর, এসি, মোটরসাইকেল তৈরি ও সংযোজন হচ্ছে। লিফট তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।

চট্টগ্রাম চেম্বার প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজ বলেন, এবার আয়কর বিষয়ে ৪৬টি, ভ্যাটে ২০টি ও শুল্ক বিষয়ে ৯৮টি প্রস্তাব দিয়েছি। সরকারি-বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। কর পদ্ধতিতে বড় রিফরমেশন প্রয়োজন হবে। দেশী শিল্পের প্রসারে ভূমিকা রাখতে হবে। অর্থনীতির অস্থিতিশীল সময়ে বেসরকারি খাত টিকে থাকতে সহায়তা দরকার। কারণ এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্মসংস্থান সমস্যায় পড়বে ।

বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসাইন বলেন, দেশী শিল্পকে সুরক্ষা, কর পরিশোধ ব্যবস্থা সহজ করা এবং আগাম কর ফেরত আনার পথ সহজ করা দরকার। মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে এখনো পুরো প্রকল্পের সব ধরনের যন্ত্রপাতি আমদানিতে সুবিধা মিলছে না। কারখানায় সোলার প্যানেল স্থাপন করতে চাই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সোলার প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতির জন্য সুবিধা মিলছে না। একটা পুরো প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতির জন্য সুবিধা দেয়া দরকার।

কনফিডেন্স সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা শিল্পের কাঁচামালের এলসি করতে পারছি না কিন্তু এখনো বিদেশী ফলসহ এমন অনেক কিছু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। ডলার রেট অফিশিয়ালি ১১০ টাকা বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত হিসাবায়ন করতে হচ্ছে ১২০ টাকায়। এদিকে আমদানি পর্যায়ে ৪৩ ডলারে ক্লিংকার এনে শুল্ক-কর নেয়া হচ্ছে ৬০ ডলার হিসাব করে।

পিএইচপি গ্রুপের পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু বলেন, ‘আমরা আমদানির সময় পুরো জাহাজের ওজনের ওপর ট্যাক্স দিই। আবার জাহাজের ভেতরে থাকা অন্যান্য আইটেমের ওপরও আলাদাভাবে ট্যাক্স দিতে হয়। বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানাই।’

রিভারেইন ফিশ অ্যান্ড ফুড প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শাহজাহান চৌধুরী বলেন, রেমিট্যান্স আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাছ থেকে প্রথমে ১ শতাংশ উৎসে কর নিয়ে নিচ্ছে। আবার বছর শেষ হতেই যতটুকু রফতানি করেছি, তার বিপরীতে ২ শতাংশ উৎসে কর নিচ্ছে কাঁচামাল ক্রয়ের ওপর। তাহলে প্রশ্নটা হলো একই প্রক্রিয়ায় কেন দুইবার এই কর নেয়া হচ্ছে?

শেয়ার করুন:-
শেয়ার