পোশাক পরার ক্ষেত্রে অনেকে প্যান্ট, পায়জামা লুঙ্গি টাখনুর নিচে পরে থাকেন, যা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। এরপরও অনেকে টাখনুর নিচের কাপড় পরেন। কেউ কেউ টাখনুর নিচে কাপড় নিয়েই নামাজ আদায় করেন। এ বিষয়ে হাদিসে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা জাহান্নামে যাবে।’ (বুখারি, হাদিস, ৫৭৮৭)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,
مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ، لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ القِيَامَةِ
‘যে ব্যক্তি অহংকার বশে তার লুঙ্গি মাটির সাথে টেনে নিয়ে বেড়াবে, কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি দৃষ্টি দিবেন না।’ -(সহিহ বুখারি, হাদিস, ৩৬৬৫)
আবু জর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তিন ব্যক্তির সঙ্গে কথা তো বলবেনই না; বরং তাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেন না। এমনকি তিনি তাদের গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না বরং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তারা কারা? এদের তো সর্বনাশ হবে। তাদের বাঁচার কোনো রাস্তা নেই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা তিনবার বলেছেন, তারা হলো- এক. যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে। দুই. যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে পণ্য বিক্রি করে। তিন. যে ব্যক্তি কারো উপকার করে আবার খোটা দেয়। (মুসলিম, হাদিস, ১০৬; নাসায়ি, হাদিস, ২৫৬৩)
আর নামাজে টাখনুর নিচে কাপড় পরা আরও বেশি গুনাহের। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত-
أَنَّهُ رَأَى أَعْرَابِيًّا يُصَلِّي قَدْ أَسْبَلَ إِزَارَهُ، فَقَالَ: الْمُسْبِلُ إِزَارَهُ فِي الصَّلَاةِ لَيْسَ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ فِي حِلٍّ، وَلَا حَرَامٍ
তিনি এক বেদুঈনকে দেখলেন যে, সে তার লুঙ্গি (টাখনু গিরার নীচে) ঝুলিয়ে নামাজ আদায় করছে। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি নামাজে লুঙ্গি (কাপড় টাখনু গিরার নিচে) ঝুলিয়ে রাখে, সে যেন আল্লাহর হালাল-হারামের সীমারেখার কোনো তোয়াক্কা করল না। (আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদিস, ৯৩৬৮)
তাই সাধারণ অবস্থায় এবং বিশেষভাবে নামাজ পড়ার সময়টাখনু ঢেকে প্যান্ট, পায়জামা, লুঙ্গি, জুব্বা পরা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। অবশ্য কাজটি অন্যায় হলেও নামাজ আদায় হয়ে যাবে। এ কারণে নামাজ নষ্ট হবে না।
-(আরিযাতুল আহওয়াযী ৭/২৩৭; শরহু সুনানি আবি দাউদ, আইনী ২/৩০০; ফয়যুল বারী ৪/৩৭৩; শরহু শিরআতিল ইসলাম, পৃ. ১১৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৭৭)