দেশে যত গণপরিবহন আছে, সেগুলো দ্রুত বিদ্যুতে নিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ‘বাংলার টেসলা’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এসব যান যতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, তার রিটার্ন অনেক বেশি।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন নসরুল হামিদ। উল্লেখ্য, টেসলা যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি।
আজ সংসদে শামীম ওসমান তাঁর সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, রিকশার মধ্যেও ব্যাটারি লাগানো হচ্ছে। এগুলো খুবই বিপজ্জনক এবং চলাও নিষিদ্ধ। এই অটোরিকশাগুলো যে চার্জ করে, তার ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ চুরি করে। তারা ৭০০–৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করছে। এগুলো একযোগে সারা দেশে বন্ধের কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, তা জানতে চান তিনি।
জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, কত দ্রুত পরিবহন (ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম) ইলেকট্রিকে নিয়ে যাওয়া যায়, সে জন্য সারা বিশ্বে একটা বিপ্লব চলছে। তেলচালিত গাড়ির ইঞ্জিনের দক্ষতার মাত্রা ২০ শতাংশ। আর ইলেকট্রিক যন্ত্রের দক্ষতার মাত্রা ৮০ শতাংশ। বাজারে যাতে দ্রুত ইলেকট্রিক গাড়ি আসে, সে জন্য তাঁরা উৎসাহিত করে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, তেলচালিত বাহনে যে দূরত্ব যেতে ১০০ টাকা লাগে, বিদ্যুৎ–চালিত যানে সেই দূরত্ব যেতে লাগবে ২০ টাকা। বাংলাদেশে ৪০ লাখের ওপর যানবাহন আছে। যারা লেড ব্যাটারি ব্যবহার করে। এগুলো চার্জ করতে সাত–আট ঘণ্টা সময় লাগে। এগুলো যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয়, তাহলে লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা। বিদ্যুৎ বিভাগ ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জার স্টেশন বসানোর নীতিমালা করেছে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘এই ৪০ লাখ থ্রিহুইলারকে আমি বলি বাংলার টেসলা।…উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে কাজ করছেন। আমরা তাদের কোনো বাধা দিচ্ছি না। যান্ত্রিকভাবে এতে ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্যুৎ যেটা ব্যবহার করছে, তার রিটার্ন কিন্তু অনেক বেশি। এই ৪০ লাখ রিকশাচালক যাঁরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন, তারা অবশ্যই আয় করছেন। এ ক্ষেত্রে লেড ব্যাটারি থেকে তারা যেন লিথিয়াম ব্যাটারিতে চলে আসে। এটা নিয়ে আমরা একটা প্রকল্প করছি। আমরা লেড ব্যাটারি নিয়ে তাদের লিথিয়াম ব্যাটারি প্রদান করব। ’
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন, দেশে যত গণপরিবহন আছে, সেগুলো দ্রুত বিদ্যুতে নিয়ে আসা উচিত। এতে খরচ কম, পরিবেশবান্ধব। তবে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয় উদ্বেগের। কোথাও অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় কি না, বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো সেটি নজরে রাখছে। বেশির ভাগই এখন অবৈধভাবে বিদ্যুৎ না নিয়ে মিটারের মাধ্যমে নিচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এমআই