তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চারটি সুপারিশ করেছে বেসরকারি সংগঠন অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)। রোববার (৮ ফেব্রুয়ারি) এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় সংগঠনটির সদস্য দৌলত আক্তার মালা এসব প্রস্তাব দেন।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আত্মা ছাড়াও বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ওমেন ইন্টারপ্রেনিউর নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন তাদের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরে।
আত্মা’র বাজেট প্রস্তাবে ৭৫ শতাংশ দখলে রাখা নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য ও কর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। সংগঠনটি বলছে, নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করে ৬৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা; মধ্যম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৬৭ টাকা থেকে ৭৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা; উচ্চস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১১৩ টাকা থেকে ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৫০ টাকা থেকে ১৬৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা প্রয়োজন।
এছাড়া মধ্যমেয়াদে (২০২৫-২৬ থেকে ২০২৭-২৮) সিগারেটের ব্রান্ডসমূহের মধ্যে দাম ও করহারের ব্যবধান কমিয়ে মূল্যন্তরের সংখ্যা ৪টি থেকে ২টিতে নামিয়ে আনা এবং সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।
ফিল্টারযুক্ত ও ফিল্টারবিহীন বিড়িতে অভিন্ন করভার (সম্পূরক শুল্ক) চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৪৫ শতাংশ প্রচলন করা; ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ১৮ টাকা থেকে ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা; ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ১৯ টাকা থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার কথা বলা হয়েছে।
জর্দা এবং গুলের দাম ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা: প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা, প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ২৩ টাকা থেকে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া সব ধরনের তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১ শতাংশ সারচার্জ বহাল রাখতে বলা হয়েছে।
আত্মা’র সদস্য দৌলত আক্তার মালা বলেন, বিড়ির কর ও মূল্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানো প্রয়োজন। যেন সস্তা সিগারেটের সঙ্গে মূল্য পার্থক্য কমে আসে। করারোপ প্রক্রিয়া সহজ করতে তামাকপণ্যের মধ্যে বিদ্যমান বিভাজন তুলে দিতে হবে।
তিনি বলেন, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের কর আহরণ ব্যবস্থা জোরদার করা এবং একই সঙ্গে প্রমিত প্যাকেট-কৌটা প্রচলনের ন্যায় অন্য কর-বহির্ভূত পদক্ষেপসমূহ অনুসন্ধান করতে হবে। এছাড়া তামাকপণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক পুনর্বহালের সুপারিশ করেন তিনি।
অর্থসংবাদ/এমআই