পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হতে পারে চলতি বছরের শেষ নাগাদ। দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে ২০২৫ সালে। এমনই আশা করছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির পর এখন কমিশনিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। রাশিয়াও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে প্রকল্পটি বুঝিয়ে দিতে পূর্ণ নিশ্চয়তা দিয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম চালু হতে পারে।
তারা বলছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি ইউরেনিয়াম এরইমধ্যে প্রকল্প এলাকায় চলে এসেছে। এখন রি-কমিশনিং স্টেজ চলছে। এর মধ্যে দিয়ে আরও তিনটি ধাপ শেষ করলে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের কাজও চলমান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ২০২৫ সালেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ পাবে দেশ।
তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) চলে আসা মানেই আমাদের দেশ এখন অনেক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। আমরা এখন বিশ্বের ৩৩তম পরমাণু শক্তিসম্পন্ন দেশ। চলতি বছর প্রথম ইউনিট এবং ২০২৫ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শেষ হবে।
১৯৬১ সালে ঈশ্বরদীর রূপপুরে হার্ডিঞ্জ সেতুর অদূরে পদ্মা নদীর তীরে এ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পাকিস্তান সরকার পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২-৭৪ সালের দিকে এখানে ২০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আলোচনা শুরু হলেও তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে এ প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রসাটম বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি করে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ শুরু হয় পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম বাংলাদেশে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া। রসাটমের উদ্যোগে সাতটি ধাপে ১৬৮টি ইউরেনিয়ামের অ্যাসেম্বলি পৌঁছেছে রূপপুরের প্রকল্প এলাকায়।
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে স্থাপিত হচ্ছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর ১২০০ রিঅ্যাক্টর। প্রকল্পটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২৪০০ মেগাওয়াট।