লোকসানের কারণে গত কয়েক বছর ধরে লভ্যাংশ পাচ্ছে না পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের বিনিয়োগকারীরা। অথচ তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটির শেয়ার দর ছুটছে লাগামহীন। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি। শেয়ার দরের এমন অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি চক্রের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র মতে, গত ২৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর এমন অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ জানতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই চিঠি পাঠায়। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি কোম্পানিটি। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের দাবি, এতে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগকারীদের মাঝে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
ডিএসইর বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত এক মাসে কোম্পানির শেয়ার দর ৯২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত ২ জানুয়ারি শেয়ারটির দর ছিলো ২৬ টাকা। আর গত ০১ ফেব্রুয়ারি শেয়ার দর বেড়ে দাড়িয়েছে ৫০ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে দর বেড়েছে ২৪ টাকা বা ৯২ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এছাড়া, গত সপ্তাহেজুড়ে (২৮ জানুয়ারি-০১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজারে ৩৯৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কোম্পানিটি। এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৬০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
ডিএসইর তথ্য মতে, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন করছে। কোম্পানিটির মোট ৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার। আর প্রাতিষ্ঠানিক ১ দশমিক ১১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ৫৯ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
গত পাঁচ বছর ধরেই ‘বি’ ক্যাটাগরির খুলনা প্রিন্টিংয়ের লোকসান অব্যাহত রয়েছে। লোকসানে থাকায় গত ৩০ জুন,২০২২ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এসময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিলো ৩ টাকা ১০ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি সম্পদের মূল্য ছিল ঋণাত্মক (নেগেটিভ) ১ টাকা ৮৬ পয়সা। লোকসানের কারণে ২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এর আগে ২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ০ দশমিক ২৫ শতাংশ নামমাত্র নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিলো।
এসএম