দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ‘ডোপ’ টেস্ট করাতে হবে

দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ‘ডোপ’ টেস্ট করাতে হবে
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকরা মাদক সেবন করে কি-না তা জানতে ‘ডোপ টেস্ট’ করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হবে—যারা গাড়ি চালাচ্ছে, তারা মাদক সেবন করে কি-না? তাদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে তা পরীক্ষা করা দরকার। প্রত্যেকটা চালকের এ পরীক্ষাটা একান্তভাবে অপরিহারর্য। এ পরীক্ষাটা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটা প্রবণতা আছে আমাদের গাড়ির ড্রাইভারদের, ওভারটেক করা। একটা গাড়ি চলে গেছে এটাকে ওভারটেক করতে হবে। তখন হুঁশ থাকে না, বেহুঁশ হয়ে ওভারটেক করতে গিয়ে অ্যাকসিডেন্ট করে। এই প্রবণতাটাও বন্ধ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ড্রাইভারদের ভালোভাবে ট্রেনিং দেয়া, লাইসেন্স দেয়ার সময় ভালো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যে—সত্যিই ভালো ড্রাইভিং জানে কি-না। টাকা দিয়ে যেন কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে না পারে সেটা দেখতে হবে।’

যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘গাড়ির ফিটনেস দরকার, সেগুলো বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, ড্রাইভারদের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টর ও সরকারি সেক্টর সবাইকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ড্রাইভার বিশ্রাম নিলো কি-না, খাবার খেলো কি-না, এ বিষয়টা দেখতে হবে।ট্রাফিক আইন মেনে চলা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চালকদের পাশাপাশি পথচারীদেরও সচেতন থাকতে হবে। সেখানে সচেতনতার খুব অভাব। বারবার বলছি এখনো বলছি, স্কুলজীবন থেকে ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জায়গায় এই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া, সচেতন করা প্রয়োজন। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সব জায়গায় ওই ট্রাফিক রুলের পোস্টার লাগিয়ে রাখা, যেন মানুষ সচেতন হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ঘটনা হলে ড্রাইভারকে মারতে মারতে মেরে ফেলা...এর ফলাফলটা কী দাঁড়াচ্ছে? একজন হয়তো আবার ধাক্কা না দিলেও বেঁচে যেত। কিন্তু ড্রাইভার মারের ভয়ে প্রাণের ভয়ে তার ওপর দিয়ে চালিয়ে গেল। এর ফলে লোকটি মারা গেল।’

‘সেজন্য আমি বারবার জনগণকে সচেতন করেছি, এখন আবারও বলবো, কোনো অ্যাকসিডেন্ট হলে, কেউ ড্রাইভারের গায়ে হাত দেবেন না, কেউ গাড়ি আক্রমণ করবেন না। বরং যে পড়ে গেছে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা নিন। আমাদের পুলিশের সার্ভিস এখন খুবই ভালো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যাকসিডেন্ট হলে যদি ড্রাইভারের দোষ হয় তাহলে আইন আছে। আইন তার ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কেউ আইন তার হাতে তুলে নেবেন না। এ আইন হাতে তুলে নেয়ার কারণে অনেক মানুষ কিন্তু মারা যায়। কারণ ড্রাইভার সাহস পায় না গাড়িটা থামিয়ে ওই লোকটাকে উদ্ধার করতে। তার ভয় হয় সে যদি গাড়ি থামাতে চায় বা সেই লোকটাকে উদ্ধার করতে চায় তাহলে সে পাবলিকের হাতে মার খাবে।’

তিনি বলেন, ‘এই মানসিকতা পরিহার করতে হবে। আমাদের যারা নিরাপদ সড়ক নিয়ে আন্দোলন করে, তাদের আমি অনুরোধ করব, এটা একটু ব্যাপকভাবে প্রচার করেন। বিচারের জন্য তো আইন আছে আদালত আছে। সেখানে বিচার হবে। কাজেই কেউ আপনারা নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না।’

দুর্ঘটনার জন্য শুধু গাড়িচালকদের দোষ না দিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ড্রাইভারদের কে দোষ দিলে হবে না, আমাদের পথচারীদেরও সচেতন থাকতে হবে। সেখানে সচেতনতার খুবই অভাব। অনেকেই হাত তুললো, তারপর রাস্তা পার হওয়া শুরু করলো। এটা যান্ত্রিক ব্যাপার, ব্রেক কষলেও তো থামতে কিছুটা সময় লাগে। এই বিষয়টায় সবাইকে সচেতন করতে হবে। এটা প্রচার করতে হবে মানুষকে জানাতে হবে। যত্রতত্র যেখানে সেখানে রাস্তা পারাপার হওয়া, এটা বন্ধ করতে হবে এবং ট্রাফিক রুল সবাইকে মেনে চলতে হবে। রাস্তা পার হতে জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবহার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা সড়ক নির্মাণের ব্যয় অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করেন তাদের বলবো—তুলনা করার আগে বাংলাদেশের মাটি পরীক্ষা করুন।’

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু