তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বছরে দুইবার (ষাণ্মাসিক) আমানত বিমার প্রিমিয়ামের তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে কোনো ব্যাংক এ তথ্য পাঠাতে বিলম্ব বা ভুল করে তাহলে জরিমানা গুনতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের ক্ষুদ্র আমানতদারীদের আমানতের সুরক্ষা ও সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ১৯৮৪ সাল থেকে আমানত বিমা পদ্ধতি তথা ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স সিস্টেমস চালু আছে। বর্তমানে ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০’ অনুযায়ী দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক আবশ্যিকভাবে আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলের সাথে বিমা করা আছে। এই আইনের ৫ নং ধারা অনুযায়ী সকল তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে আলোচ্য তহবিলে প্রিমিয়াম জমা প্রদান করে। প্রিমিয়াম হিসাবায়নের লক্ষ্যে বর্তমানে প্রতি ষাণ্মাসিকে বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক হতে নির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী আমানত বিমা প্রিমিয়াম নির্ধারণী তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সংগৃহীত তথ্য প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাই পূর্বক নির্ধারিত প্রিমিয়াম হার প্রয়োগ করে ব্যাংকগুলোর জন্য আবশ্যিকভাবে প্রদেয় প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ফলে ব্যাংকগুলোর পাঠানো আমানত বিমা প্রিমিয়াম নির্ধারণী তথ্যগুলোর সুনির্দিষ্টতা নিশ্চিত করার জন্য ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট থেকে আগে জারি করা এ সংক্রান্ত সার্কুলার লেটারসমূহ একীভূত করে এই মাস্টার সার্কুলারটি জারি করা হয়েছে।
মাস্টার সার্কুলারে আমানত বিমা প্রিমিয়াম নির্ধারণী তথ্য দাখিল সম্পর্কে বলা হয়েছে, সকল তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য প্রস্তুত করতে হবে। প্রস্তুত করা সব তথ্যের সফট কপি এবং হার্ডকপি দাখিল করতে হবে।
তফসিলি ব্যাংকগুলোকে জানুয়ারি থেকে জুন ও জুলাই থেকে ডিসেম্বর ষাণ্মাসিকের শেষ কর্মদিবসের হিসাবের স্থিতির ভিত্তিতে যথাক্রমে ৩১ জুলাই এবং ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট আগের বছরের তথ্য পাঠাতে হবে।
ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য সম্বলিত বিবরণী দাখিল করলে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’ এর ১০৯(২) ধারার বিধানবলে অর্থদণ্ড ও তদসংশ্লিষ্ট শাস্তি আরোপ করা হবে।
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হলে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’ এর ১০৯(৭) ধারার বিধান বলে নির্ধারিত হারে জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হবে।
অত্র বিভাগ হতে প্রিমিয়াম প্রদানের জন্য পত্র জারির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে সকল ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট বিভাগে সংরক্ষিত আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল হিসাবে নির্ধারিত প্রিমিয়াম জমা প্রদান করতে হবে। প্রিমিয়াম পরিশোধের সর্বশেষ দিন সরকারি ছুটির দিন হলে পরবর্তী প্রথম কর্মদিবসকে সর্বশেষ দিন হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিমাকৃত কোনো ব্যাংক প্রিমিয়াম প্রদানে ব্যর্থ হলে ‘ব্যাংক আমানত বিমা আইন, ২০০০’ এর ৫(৩) নং ধারায় বর্ণিত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এর চলতি হিসাব থেকে সমপরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম বাবদ কর্তন করে আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলে জমা করা হবে। এ ক্ষেত্রে বিলম্বিত সময়ের জন্য প্রিমিয়ামের উপর ব্যাংক রেটে দণ্ডসুদ আরোপ করা হবে।
এ নির্দেশনা জানুয়ারি-জুন, ২০২৪ ষাণ্মাসিকের জন্য ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ভিত্তিক তথ্য দাখিলের সময় হতে কার্যকর হবে। এই বিভাগের ২০১১, ২০১৩, ২০২০, ২০২১ সালের সংশ্লিষ্ট সার্কুলার রহিত করা হয়েছে। তথ্য দাখিল ও প্রিমিয়াম প্রদান ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে আগে জারি করা ২০১২, ২০১৪ সালের সার্কুলার কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদ/এমআই