২০২৩ সালে ৬১৫ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস প্রস্তুতকারী বহুজাতীক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের। নানাবিধ কারণে ২০২৩ সালে ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইন্ডাস্ট্রি সার্বিকভাবে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে না পারলেও, সিঙ্গার বিগত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে মুনাফা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। সিঙ্গারের পরিচালনা পর্ষদ সাধারণ সভায় নিরীক্ষিত ফলাফলের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের জন্য ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করেছেন।
গ্রস প্রফিট মার্জিন পূর্ববর্তী বছরে ২৩.০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে ২৮.৮ শতাংশে উন্নিত হয়েছে। কৌশলগতভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, উৎপাদন-ভিত্তিক ব্যবসায়িক নীতি গ্রহণ করার ফলে সিঙ্গার এই মুনাফা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। ফলশ্রুতিতে, ট্যাক্স পরবর্তী মুনাফা ২০২২ সালে ৭৩ মিলিয়ন টাকা থেকে ৬১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে ৫২২ মিলিয়ন টাকায় উন্নিত হয়েছে। কোম্পানীর শেয়ার প্রতি আয় ৭৩ পয়সা থেকে ৫ টাকা ২৪ পয়সায় উন্নিত হয়েছে। নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ২০২৩ সালে ২২ টাকা ৭৬ পয়সায় উন্নিত হয়েছে, যা ২০২২ সালে ছিল ১৮ টাকা ১৯ পয়সা। সামগ্রিকভাবে কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ১৭ বিলিয়ন টাকা রাজস্ব অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
বছরজুড়েই মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, এলসি খোলা, ক্রমবর্ধমান আর্থিক ব্যয় বৃদ্ধি, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চলমান বৈশ্বিক সংকট এবং জাতীয় নির্বাচনের সময়কালীন নানাবিধ চ্যালেঞ্জ কোম্পানি সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। তা স্বত্বেও, সিঙ্গার এই বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে থাকার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল।
বিগত বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে কোম্পানীর সামগ্রীক অর্থায়ন সংক্রান্ত ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় অর্থায়ন ব্যয় ২ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে ২০২৩ সালে কোম্পানীর তা সংক্রান্ত ব্যয় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, সিঙ্গার হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বাজারে দৃঢ়ভাবে উপস্থিত থাকবে এবং মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানীর কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করবে। বৈশ্বিক দক্ষতা, ব্যবসায়িক পরিধি এবং জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে, সিঙ্গার বাজারে তাঁর বর্তমান শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখে ব্র্যান্ড ইমেজ বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করে যাবে।
সিঙ্গার বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ কনজ্যুমার ডিউরেবলসের খুচরা বিক্রেতা, যার ৪৫১ টি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত আউটলেট রয়েছে। কোম্পানিটির ৫৭ শতাংশ শেয়ার নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক রিটেইল হোল্ডিংস বিহোল্ড বি.ভি.-এর মালিকানাধীন, যা তুরস্কের আর্চেলিক’র একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। আর্চেলিক কনজ্যুমার ডিউরেবলসের জন্য বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠান। এটি বিশ্বের ৫৩টি দেশে ১৪টি ব্র্যান্ড পরিচালনা করে এবং ১৪৭টি দেশে এর কার্যক্রম বিস্তৃত রয়েছে। বিশ্বব্যাপী ৩০টি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রে আর্চেলিকের ২৩০০ জনেরও বেশি গবেষক নিযুক্ত রয়েছে। আর্চেলিকের ফ্ল্যাগশিপ ব্র্যান্ড হল বেকো (Beko), যা ইউরোপের শীর্ষ ৩টি ব্র্যান্ডের একটি৷ আর্চেলিক তুরস্কের একমাত্র ফরচুন ৫০০ কোম্পানি – কচ হোল্ডিংয়ের আওতাধীন একটি প্রতিষ্ঠান।