রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের জনগণ এবং গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সংসদ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন এবং প্রতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিয়ে থাকেন। এরই অংশ হিসেবে আজ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ ভাষণ দেন।
এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সংসদ সদস্যরা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সফলভাবে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের গণতন্ত্র বিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও গণতন্ত্রের শাণিত চেতনা ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সব পদক্ষেপ সার্থক হয়েছে। নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে।
আগামীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো অহিংস কর্মসূচি দেবে আশা প্রকাশ করে মো. সাহাবুদ্দিব বলেন, আশা করি, ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে। সরকারও এক্ষেত্রে সংযত আচরণ করবে, এটিই সবার প্রত্যাশা।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। তবে উন্নয়নের মূল ভিত্তি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা। গণতন্ত্রের স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হলে উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হয়। গত দেড় দশকে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বজায় থাকার কারণে দেশের এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, উন্নয়ন স্থায়ী ও টেকসই করতে হলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মজবুত, তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা ছড়িয়ে দিতে হবে। উন্নয়নের এ গতিধারা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।