ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের পরে দেশের পুঁজিবাজারে কিছুটা নিম্নগতি দেখা গেলেও শিগগিরই তা ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘদিন পর শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের ফলে শেয়ার বিক্রির চাপ তুলনামূলক বেড়ে যাওয়ায় সূচকের পতন ঘটে। একইসঙ্গে জানুয়ারির মাসের ক্লোজিং এডজাস্টমেন্টের ফলে সূচক নিম্নগতিতে ফিরে যায়। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন সূচকের নিম্নগতিতে থাকলেও লেনদেনের পরিমান আশানুরূপ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, বাজার তার নিজস্ব গতিতে খুব শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে। বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ফ্লোরপ্রাইস বিদ্যমান থাকা ১২টি কোম্পানি থেকে তা তুলে নেওয়ার গুজব ছড়ালেও কমিশনে তা নিয়ে আপাতত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বাজার আরেকটু স্থিতিশীল হলে পরিস্থিতি বিবেচনায় তা তুলে নেওয়া হতে পারে। তবে শিগগিরিই তা হচ্ছে না।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, শেয়ারবাজার অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে এবং খুব শিগগিরই স্থিতিশীল হবে। কারণ, ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের ফলে সূচক কমলেও লেনদেন কিন্তু আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্লোরপ্রাইসের সময়ে বাজারে লেনদেন হতো ৪০০-৫০০ কোটি টাকা। অথচ আজকে সূচকের নিম্নগতি থাকার পরেও লেনদেন হয়েছে ৮৮০ কোটি টাকা। তার মানে কেউ না কেউ শেয়ার ক্রয় করেছে, বাজারে শুধু বিক্রি ছিলো না। তবে ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের ফলে মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারদর কমেনি, বরং বেড়েছে। কিছু অতিমূল্যায়িত শেয়ারের দর কমেছে। সুতরাং আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে বাজার তার নিজস্ব গতিতে ফিরে আসবে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, ফ্লোরপ্রাইস ব্যাপারটি থাকার কোন কথা ছিলো না। সেখানে ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহার করার ফলে দেশের শেয়ারবাজারের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল আসবে। বরং ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের ফলে শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার। ফ্লোরপ্রাইস যদি না থাকতো তবে বাজার অনেক আগেই তার নিজস্ব গতিতে ঘুরে দাঁড়াতো। আমাদের বাজার নিম্নমুখী থেকেই ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে আমি আশাবাদী। আজকে সূচক ৭৭ পয়েন্ট হারিয়েছে, আরেকদিন দেখা যাবে সূচক ৭৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় বছরে ফ্লোরপ্রাইসের কারণে অনেকগুলো কোম্পানির শেয়ারদর অতিমূল্যায়িত হওয়া সত্ত্বেও মূল্য সংশোধন হতে পারেনি। ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের ফলে এখন তা সংশোধন হচ্ছে। এছাড়া মার্জিন লোন থেকে আমাদের বিনিয়োগকারীদের বেরিয়ে আসতে হবে। এখন যে বাজার নিম্নমুখী তার অন্যতম কারণ মার্জিন লোন। লেনদেন (ট্রেড ভলিউম) বাড়ানোর জন্য মার্জিন লোনে উৎসাহিত করা উচিত নয়। মার্জিন লোন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরও কঠোর হওয়া উচিত, তবে তা এই মুহূর্তে না। বাজার স্থিতিশীল হলে তখন এ বিষয়ে কড়াকড়ি হওয়া উচিত।