বৈদেশিক বাজারে চলতি বছরে চাহিদাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভুট্টার সরবরাহ। গত বছরের মজুদ বিপুল পরিমাণে থেকে যাওয়ায় এবার চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা কম। এর প্রভাবে বছরজুড়ে খাদ্যশস্যটির নিম্নমুখী চাপে থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
এরই মধ্যে তিন বছরের সর্বনিম্নে নেমেছে ভুট্টার দাম। বাড়তি সরবরাহ এবং কম দামের সুফল পাচ্ছেন পোলট্রিসহ ভারতের বেশকিছু ইন্ডাস্ট্রি। স্থানীয় বাজারে ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে সংশ্লিষ্টরা বর্তমানে আমদানির মাধ্যমেই শস্যটির চাহিদা পূরণকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) ভুট্টার মার্চে সরবরাহ চুক্তি বিক্রি হচ্ছে বুশেলপ্রতি ৪ ডলার ৪৫ সেন্টে, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশনের গবেষণা ইউনিট বিএমআই জানায়, নিট উদ্বৃত্তে ফিরবে ভুট্টার বৈশ্বিক বাজার। ২০২৩-২৪ মৌসুমে (জুলাই-জুন) উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৪ কোটি ১ লাখ টনে। ২০২২-২৩ মৌসুমে যেখানে ১১ লাখ টনের ঘাটতি ছিল। বিপুল পরিমাণ মজুদের কারণে বাজারে শস্যটির দাম এখন নিম্নমুখী প্রবণতায়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং ইনফরমেশন সিস্টেম সম্প্রতি ভুট্টার বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস বাড়িয়ে সংশোধন করেছে। এটি জানায়, এবার শস্যটির উৎপাদন ২০২৩ সালের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি) জানায়, ভুট্টার পাশাপাশি এ বছর গম ও যবসহ সব ধরনের শস্য উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগও (ইউএসডিএ) ভুট্টার বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। ওয়ার্ল্ড মার্কেট অ্যান্ড ট্রেড রিপোর্টে সংস্থাটি জানায়, শীর্ষ উৎপাদক ব্রাজিলে চলতি মৌসুমে ভুট্টার উৎপাদন কমতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও প্যারাগুয়েতে উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড ১ কোটি ৫৩ লাখ ৪০ হাজার বুশেল উৎপাদন হতে পারে।
সিবিওটিতে তালিকাভুক্ত ভুট্টার দ্বিতীয় মাসভিত্তিক ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে বিএমআই। চলতি বছর প্রতি বুশেলের দাম ৫ ডলার এবং আগামী বছর সাড়ে ৪ ডলারে থাকবে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। ভুট্টার দাম নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে বলেও জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে ইউএসডিএ ভুট্টার মূল্য পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়েছে। সংস্থাটি মনে করছে চলতি মৌসুমে শস্যটির গড় বাজারদর থাকবে বুশেলপ্রতি ৪ ডলার ৮০ সেন্টে।
আইজিসি জানায়, বিশ্ববাজারে সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি শস্যটির সমাপনী মজুদও ৫০ লাখ টন বাড়ার সম্ভাবনা আছে। মজুদের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৫৯ কোটি টনে। বৈশ্বিক বাণিজ্য বাড়তে পারে ৫০ লাখ টন।
এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং ইনফরমেশন সিস্টেম জানায়, ভুট্টার বৈশ্বিক ব্যবহার বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পশুখাদ্য উৎপাদন খাত। তবে রাশিয়া এবং এশিয়া ও আফ্রিকার বেশকিছু দেশে ব্যবহার নিম্নমুখী থাকতে পারে।
কাফি