বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করবেন যেভাবে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে; যা সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে।

ভর্তি-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন অনলাইনে করা যাবে। পরীক্ষা প্রাক-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা দুটি শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। প্রাক-নির্বাচনী ভর্তি পরীক্ষা ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত আবেদনকারীরা মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। চূড়ান্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ মার্চে।

প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সময় থাকবে ১ ঘণ্টা। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরের ধাপে চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস কৌশল, পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি-ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকেরা আবেদন করতে পারবেন। যেসব ছাত্রছাত্রী ২০২০ বা ২০২১ সালে মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, অথবা ২০২০ সালে মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফল ১২ মার্চ, ২০২৩ তারিখের পরে শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফল প্রাপ্ত হয়েছেন, অথবা ২০১৯ সালের নভেম্বর বা তার পরে জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং ২০২২ সালের নভেম্বর অথবা তার পরে জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রাপ্ত হয়েছেন, অন্যান্য শর্তপূরণ সাপেক্ষে শুধু তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেসব ছাত্রছাত্রী ইতিপূর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন অথবা অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছেন, তারা এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা

প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অথবা কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে গ্রেড পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগে (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নসহ) জিপিএ ৫-এর স্কেলে ন্যূনতম জিপিএ-৪.০০ পেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা দাখিল অথবা সমমানের পরীক্ষায় পাস করতে হবে অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে।

প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতিতে জিপিএ ৫-এর স্কেলে জিপিএ-৫ এবং উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়সমূহের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় পাস করতে হবে অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড/নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে।

আরও পড়ুন: ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় ২ লাখ ৭৯ হাজার আবেদন

যেসব প্রার্থী ২০২০ সালে মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় তাদের সংশোধিত ফলাফল ১২ মার্চ, ২০২৩ তারিখের পরে শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফল প্রাপ্ত হয়েছেন, সে ক্ষেত্রে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতিতে ৫-এর স্কেলে জিপিএ-৫.০০ এবং উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়সমূহের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় পাস করতে হবে অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড/নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে।

সব সঠিক আবেদনকারীর মধ্য থেকে বাছাই করে ১ম থেকে ১৮০০০তম পর্যন্ত সব আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে। এই বাছাইয়ের জন্য যথাক্রমে আবেদনকারীর উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষায় উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয় তিনটিতে প্রাপ্ত মোট নম্বর এবং উচ্চতর গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরকে অগ্রাধিকারের ক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং জিসিই ‘এ’ লেভেল পাস করা প্রার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য জিসিই ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ের (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজিসহ) প্রতিটিতে ন্যূনতম বি গ্রেড এবং জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন-তিন বিষয়ের যেকোনো দুটিতে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড এবং একটিতে ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে।

ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রাপ্ত সব সঠিক আবেদনকারীর মধ্য থেকে উল্লিখিত নির্ধারিত গ্রেডের ভিত্তিতে বাছাই করে ১ম থেকে ৪০০তম পর্যন্ত আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে। এই বাছাইয়ের জন্য যথাক্রমে আবেদনকারীর জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে প্রাপ্ত গ্রেডকে অগ্রাধিকারের ক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত সব সঠিক আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।

উল্লিখিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের দুটি শিফটে বিভক্ত করে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা হবে। পরিসংখ্যানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিটি শিফটে প্রার্থীদের মেধার বিন্যাসের সমতুল্যতা নিশ্চিত করা হবে। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের মেধাক্রম অনুসারে প্রতি শিফটের ১ম থেকে ৩০০০তম শিক্ষার্থীকে মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত করা হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত ন্যূনতম ১২ জন পরীক্ষার্থী (পর্যাপ্ত আবেদন গ্রহণ সাপেক্ষে) মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

আবেদনপত্র গ্রহণ, প্রাক-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি

১. অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও জমা শুরু : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা।
২. অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও জমা শেষ : ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার বেলা ৩টা।
৩. মোবাইল বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন ফি প্রদান শেষ : ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার বেলা ৩টা।
৪. ইটিএসআর চিহ্নিত আবেদনপত্র সরাসরি রেজিস্ট্রার অফিসের ভর্তি শাখায় জমা দেওয়া অথবা রেজিস্টার্ড ডাকযোগে/কুরিয়ারের মাধ্যমে রেজিস্ট্রার অফিসে প্রেরণ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ মঙ্গলবার (শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) সকাল ১০টা বেলা ৩টা (সরাসরি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।
৫. প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য আবেদনকারীদের নামের তালিকা প্রকাশের সর্বশেষ তারিখ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার।
৬. প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার (শিফট ০১-‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপ, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা), শিফট ০২- ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপ: বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা।)
৭. মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।
৮. মূল ভর্তি পরীক্ষা: ৯ মার্চ ২০২৪, শনিবার, (মডিউল ‘A’: গ্রুপ ‘ক’ এবং ‘খ’ উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা) এবং
৯. ভর্তির জন্য নির্বাচিত ও অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ : ৩১ মার্চ ২০২৪।

আবেদনের নিয়ম

আবেদন করার নিয়ম ভর্তির নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট-এ পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে নির্দেশনা মোতাবেক আবেদন ফরম পূরণ করে তা অনলাইনে দাখিল করতে হবে। দাখিল করা শেষে একটি আবেদন ক্রমিক নং প্রদান করা হবে এবং পরে এই নম্বরের বিপরীতে বুয়েটের ওয়েসবাইটে বর্ণিত পদ্ধতিতে প্রাথমিক আবেদন ও ভর্তি পরীক্ষা বাবদ প্রদেয় ফি জমা দিতে হবে। অতঃপর আবেদনটি চূড়ান্তভাবে দাখিল করতে হবে।

মোট আসনসংখ্যা

পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যান্য এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থীদের জন্য প্রকৌশল বিভাগসমূহ ও নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট ৩টি এবং স্থাপত্য বিভাগে ১টি সংরক্ষিত আসনসহ সর্বমোট আসনসংখ্যা এক হাজার ৩০৯টি।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার