সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে ‘শরীফার গল্প’ বাদ দিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। আজ বৃহস্পতিবার এ নোটিশ পাঠানো হয়।
ওই আইনি নোটিশটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবির) চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে শরীফার গল্প বলা হয়েছে। এখানে শরিফ আহমেদ একজন ছেলে এবং সে শারীরিকভাবে একজন ছেলে। কিন্তু সে মনে করে, সে একজন মেয়ে। তাই তার নাম পরিবর্তন করে রেখেছে শরীফা। এখানে স্বীকার করা হয়েছে, শরিফ আহমেদের শারীরিক কোনো পরিবর্তন হয়নি। শুধু মানসিকভাবে সে মনে করে, সে একজন মেয়ে।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গল্পের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ট্রান্সজেন্ডারের প্রতি আকৃষ্ট করা হয়েছে। সুকৌশলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি প্রেরণা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
আইনি নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে ‘শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়াসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বইয়ের দোকান থেকে এই বই প্রত্যাহার করতে হবে বলে নোটিশে বলা হয়। এর পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সংশোধিত বই সরবরাহ করতে হবে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মহামান্য হাইকোর্টে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রিট পিটিশন করা হবে বলে নোটিশে বলা হয়।
নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে করা সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক একটি পাঠ রয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক চলছে।
বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক একটি অনুষ্ঠানে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ‘শরীফার গল্প’টি পর্যালোচনা করার জন্য উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত জনসচেতনতামূলক পাঠ ‘শরীফার গল্পে’ সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে। এনসিটিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সমালোচনার জন্ম দেওয়া বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি যদি মত দেয়, তাহলে এ বছরই গল্পে সামান্য পরিবর্তন করে সেটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুর রশীদকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি মাওলানা কফিল উদ্দীন সরকার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুর রশিদ।
অর্থসংবাদ/এমআই