ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

কী আছে লোকসানি খান ব্রাদার্সের শেয়ারে? তদন্তে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের উৎপাদন বন্ধ। সহযোগি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য সাব কন্ট্রাক্টের কাজ করে কোনো রকমে চলছে কোম্পানিটি। তারপরও কোম্পানির শেয়ার দরে যেন আগুন লেগেছে। কোম্পানিটির শেয়ারদর ঘোড়ার গতিতে ছুটছে। সর্বশেষ হিসাববছরে বড় লোকসান দিলেও কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েই চলেছে। লোকসানি প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর উল্লম্ফনের পেছনে কারসাজির চক্রের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশে তদন্ত করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমাও দিয়েছে বিএসইসিতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসই সূত্র মতে, গত এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর প্রায় ১০০ শতাংশ বেড়েছে। গত মাসের ২৪ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিলো ১০৪ টাকা ৬০ পয়সা। আজ বুধবার কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে দাড়িয়েছে ২০৮ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে শেয়ারটির দর বেড়েছে ১০৩ টাকা ৭০ পয়সা বা ৯৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিলো মাত্র ১১ টাকা ৪০ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৪ গুণের বেশি বেড়েছে।

এ বিষয়ে খান ব্রাদার্সের কোম্পানি সচিব তপন কুমার সরকারের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মুখপাত্র ও নির্বাহি পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, ডিএসইকে তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কমিশন থেকে। ইতিমধ্যেই ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুয়ায়ী কোনো ধরণের কারসাজির প্রমান পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত কয়েক বছর ধরেই ‘বি’ ক্যাটাগরির খান ব্রাদার্সের লোকসান অব্যাহত রয়েছে। লোকসানে থাকায় গত ৩০ জুন,২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এসময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিলো ৬ পয়সা। এর আগের বছর (২০২২) কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নামমাত্র নগদ ২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিলো। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি।

বিএসইসির সার্ভেলেন্স টিমের নজরে খান ব্রাদার্সের শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেন ধরা পড়ে। কোম্পানিটির এমন অস্বাভাবিক লেনদেন এবং শেয়ারদর বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি পক্ষ কারসাজি করছে বলে ধারণা করে বিএসইসি। ফলে গত বছরের ১৩ জুলাই এক চিঠির মাধ্যমে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। চিঠি ইস্যু হওয়ার ২০ কর্মদিবসের মধ্যে ডিএসইকে তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছরেও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোম্পানিটিকে নোটিস পাঠায়। খান ব্রাদার্সের এমন অস্বাভাবিক শেয়ার দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে গত ১৬ জানুয়ারি নোটিস পাঠায় ডিএসই। এর জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ছে। এর আগেও বহুবার কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধির পেছনে ভিন্ন কোনো কারণ আছে কি-না জানতে চেয়েছে ডিএসই। তবে প্রতিবার কোম্পানি জানিয়েছে শেয়ার দর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

অর্থসংবাদ/এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার