২০২৩-২৪ চলতি অর্থবছরে বিপণন মৌসুমে আটা-ময়দার বৈশ্বিক বাণিজ্য বাড়ার পূর্বাভাস মিলেছে। শীর্ষ রফতানিকারক তুরস্ক থেকে সরবরাহ অস্বাভাবিক বাড়ার সম্ভাবনা এবং সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা বাণিজ্য প্রবাহকে চাঙ্গা রাখবে।
ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিলের (আইজিসি) প্রান্তিকভিত্তিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আইজিসি সম্প্রতি আটা-ময়দার বৈশ্বিক বাণিজ্য পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। এতে বাণিজ্যের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ টন, যা গত বছরের অক্টোবরে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় দুই লাখ টন বেশি।
আইজিসি জানায়, দীর্ঘ সময় ধরেই আটা-ময়দার শীর্ষ রফতানিকারক তুরস্ক। এ মৌসুমে দেশটির রফতানি বিপুল পরিমাণে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোয় দেশটি সবচেয়ে বেশি রফতানি করবে।
২০২৩-২৪ মৌসুমের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ গত বছরের জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত তুরস্ক প্রায় নয় লাখ টন আটা-ময়দা সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলে রফতানি করেছে বলে জানায় আইজিসি। এটি ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং পাঁচ বছরের গড় রফতানির তুলনায় তিন গুণ বেশি। বিশেষ করে সোমালিয়া, সুদান ও জিবুতিতে সবচেয়ে বেশি রফতানি করা হয়েছে। তবে সিরিয়া, ইয়েমেন ও শ্রীলংকায় রফতানি প্রবাহ ছিল তুলনামূলক ধীর।
কাউন্সিলের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে তুরস্কের আটা-ময়দা রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৫৮ লাখ টনে। ২০২২-২৩ মৌসুমে যা ছিল ৪৯ লাখ টন। এদিকে তুরস্কের রফতানি বাড়লেও অন্য শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে কাজাখস্তান, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে রফতানির আকার কিছুটা ছোট থাকবে বলে জানিয়েছে আইজিসি।
সংস্থাটি বলছে, তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাজাখস্তান এ মৌসুমে ২৫ লাখ টন আটা-ময়দা রফতানি করতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় আড়াই লাখ টন কম। রাশিয়া থেকে রফতানি হতে পারে সাত লাখ টন, যা আগের বছরের তুলনায় চার লাখ টন বেশি।
স্থানীয় চাহিদার পুনরুদ্ধার এবং কিছু বাজারে সঙ্গে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রফতানি পূর্বাভাস কমিয়েছে আইজিসি। সংশোধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে পাঁচ লাখ টনে। তবে আগের বছরের তুলনায় রফতানি প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
এদিকে সিরিয়ার আটা-ময়দা আমদানি পূর্বাভাস কমিয়েছে আইজিসি। তবে আফগানিস্তান ও ইরাকের আমদানি পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে গত মৌসুমের তুলনায় দেশ দুটির আমদানি লক্ষণীয় মাত্রায় কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আফগানিস্তানের আমদানি ৫০ হাজার টন কমে ২৩ লাখ ৫০ হাজার এবং ইরাকের আমদানি তিন লাখ টন কমে ১৭ লাখ টনে নামতে পারে।
আইজিসি জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে গমের উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় ২ শতাংশ বা ১ কোটি ৬০ লাখ টন কমতে পারে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৭৮ কোটি ৮০ লাখ টনে। তবে গত মাসে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।