নতুন বছরের প্রথম দিনে ৭.৫ মাত্রার ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয় জাপানে। রাজধানী টোকিওসহ দেশটির একাধিক শহরে তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২১৩ জন। আহতের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। পানি ও বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিল বহু পরিবার। ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বিভিন্ন শিবিরে।
সম্প্রতি নোটো উপদ্বীপের উপগ্রহ থেকে তোলা একটি চিত্র সামনে এসেছে। এতে ভূমিকম্পের পরের দিনের ছবিগুলোর সঙ্গে ২০২৩ সালের জুনের স্যাটেলাইট চিত্রগুলোর তুলনা করে নতুন ভূমি জেগে ওঠার বিষয়টিকে নিশ্চিত করা হয়। ছবিতে দেখা গেছে, দেশটির অন্তত ১০টি জায়গা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশ কিছুটা ওপরে উঠে গেছে। এতে আগের উপকূলীয় সীমান্তের সঙ্গে অন্তত ২৫০ মিটার নতুন জমি যোগ হয়েছে। অর্থাৎ ওই উপকূলের বাসিন্দাদের কাছ থেকে সমুদ্র প্রায় সোয়া কিলোমিটার দূরে সরে গেছে।
ভূ-বিজ্ঞানীরা বলছেন , বছরের প্রথম দিনের ভূমিকম্পের জেরে জাপানের ভৌগলিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। কোথাও সমুদ্র ৮০০ ফুটের বেশি দূরে সরে গেছে। আবার কোনও জায়গা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ থেকে ১৫ ফুট ওপরে উঠে গেছে।
জাপানের ভূ-বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, সুজু, ওয়াজিমা, সিখার মতো অঞ্চল কমপক্ষে ৪ মিটার উঁচু হয়ে গেছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে।
জলের নিচ থেকে নতুন ভূমি বেরিয়ে আসায় ওই এলাকাটির সমুদ্র বন্দর এখন শুকনো খটখটে। টোকিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, নোটো উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অনুসন্ধান চালিয়ে তারা অন্তত ১০টি স্থানে নতুন জমি জেগে ওঠার প্রমাণ পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ারে রয়েছে জাপান। ওই অঞ্চলে প্রায় ৪৫২টি আগ্নেয়গিরি রয়েছে। মাঝেমধ্যেই সে গুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এছাড়া অস্থির টেকটনিক প্লেট ধাক্কা মারে একে অপরকে। কখনও একটি প্লেট ঢুকে যায় অন্য প্লেটের তলায়। এর কারণেও ভূগর্ভে প্রচণ্ড তাপ ও শক্তি তৈরি হয়। তাই জাপান, টোঙ্গো, ইকুয়েডরের মতো দেশ সবকটিই ভূমিকম্পপ্রবণ।