প্রাথমিক শিক্ষক ‘কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ড’র অনুমোদন

সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট বোর্ড গঠন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ১৮ সদস্যের কমিটিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। আর সদস্য সচিব থাকবেন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন)।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাক্ষরে এই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটির মেয়াদ হবে তিন বছর। আইন অনুযায়ী ২১ সদস্যের কমিটি করার কথা থাকলেও ১৮ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে পরবর্তী সময়ে কো-অপ্ট করা হবে।

ট্রাস্টি বোর্ডে মহাপরিচালক কর্তৃক ১১ জন শিক্ষককে মনোনীত করা হয়েছে। এছাড়া, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ আরও ছয়জন সরকারি সদস্য হিসেবে বোর্ডে থাকবেন। এখানে পদকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও পদের কোনো পরিবর্তন হবে না।

২০২২ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২২ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এরপর সংসদে পাশ হওয়ার পর আইনের কাঠামো নিয়ে কাজ শুরু করে অধিদপ্তর। সর্বশেষ আজ (বৃহস্পতিবার) চূড়ান্ত কমিটির অনুমোদন দেওয়া হলো।

আইনটিকে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা যুগান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তারা বলছেন, এখন কোনো শিক্ষক চাকরিরত অবস্থায় মারা গেলে তার অপ্রাপ্ত বয়সের সন্তানের লেখাপড়ার খরচ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে দেওয়া হবে।

শিক্ষকরা বলছেন, এই ট্রাস্ট হওয়ার পর চাকরিরত অবস্থায় একজন শিক্ষকের মৃত্যু হলে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো সন্তান থাকলে, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু থাকলে ও তৃতীয় লিঙ্গের কোনো শিশু থাকলে, তাদের লেখাপড়ার খরচ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ট্রাস্টটি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। সরাসরি সরকারি নয়, অটোনোমাস টাইপের আইন দিয়ে গঠিত এই ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। সরকারের পূর্ব অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে শাখা বা কার্যালয় স্থাপন করা যাবে। পরিচালনায় একটি ট্রাস্টি বোর্ড থাকবে। সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের জন্য এ কল্যাণ ট্রাস্ট ২১ সদস্যের একটি ট্রাস্টিবোর্ড থাকবে। সেখানে একজন চেয়ারম্যান থাকবেন। প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করবেন। সদস্য সচিব হবেন মহাপরিচালক কর্তৃক নিয়োগ করা একজন শিক্ষক।

তারা তাদের মনোনয়নের তারিখ থেকে তিন বছরের জন্য ওই বোর্ডে থাকতে পারবেন। ট্রাস্টের একটি তহবিল থাকবে। ট্রাস্টের নামে বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো তফসিলি ব্যাংকে এটা রাখা হবে। এখান থেকে ব্যয় নির্বাহ করা হবে। ট্রাস্ট তার আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করবে ও বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করবে।

বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সরকারের কাছে জমা দেবে, অর্থাৎ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে। তাদের কাজ হবে শিক্ষক ও পোষ্যদের জন্য আর্থিক সাহায্য দেবে। শিক্ষকের স্বামী বা স্ত্রী-সন্তানের শিক্ষা সহায়তার জন্য এককালীন আর্থিক সাহায্য বা বৃত্তি দেবে। শিক্ষকের স্বামী বা স্ত্রী-সন্তানের জন্য বৃত্তিমূলক বা অন্যান্য পেশাগত আর্থিক সহায়তা দেবে। আর চাকরিরত অবস্থায় কোনো শিক্ষকের মৃত্যু হলে সেই শিক্ষকের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের জন্য লেখাপড়ার খরচ ট্রাস্টের তহবিল থেকে নির্বাহ করা হবে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার