এক ব্যাংকের গ্রাহক অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের চার্জ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতদিন এ চার্জ ১০ থেকে ১৫ টাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এখন থেকে ভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থ উত্তোলনে সর্বোচ্চ ২০ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। তবে এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে ইস্যুয়িং ব্যাংক আদায় করতে পারবে। ৫ টাকা অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে পরিশোধ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ’ থেকে বৃহস্পতিবার জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন করে নির্ধারিত ফি ও চার্জ প্রযোজ্য হবে।
এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনে চার্জ বাড়ানোর পাশাপাশি পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), বাংলা কিউআর, ই-কমার্স, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার (আইবিএফটি) এবং সরকারি পরিসেবার চার্জ ও ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ নির্দেশনার ফলে কিছু ক্ষেত্রে চার্জ আগের মত থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা বাড়বে বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একটি ব্যাংকের গ্রাহক ভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থ উত্তোলনে ভ্যাটসহ সর্বোচ্চ ২০ টাকা চার্জ পরিশোধ করতে হবে। ব্যালেন্স স্থিতি অনুসন্ধান ও ক্ষুদে বিবরণী প্রদানের চার্জ হবে সর্বোচ্চ ৫ টাকা। আর এটিএম বুথের মাধ্যমে তহবিল স্থানান্তরে সর্বোচ্চ ১০ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে। এই চার্জ কার্ড ইস্যুয়িং ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে প্রদান করবে। নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে ইস্যুয়িং ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৫ টাকা (ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত) গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। অন্যান্য লেনদেনের সার্ভিস চার্জ বাবদ উল্লেখিত সম্পূর্ণ অর্থ কার্ড ইস্যূয়িং ব্যাংক নিজেদের গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমানে ভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নগদ টাকা উত্তোলনে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ১৫ টাকা চার্জ পরিশোধ করতে হয়। তবে আইএফআইসিসহ কিছু ব্যাংকে নিজেদের গ্রাহকদের জন্য এ চার্জ পুরো ফ্রি করে দিয়েছে। অর্থাৎ ওই ব্যাংকগুলোর গ্রাহকরা ভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করলেও কোনো চার্জ পরিশোধ করতে হবে না।
পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), বাংলা কিউআর, ই-কমার্সের ফি বা চার্জ নির্ধারণ করে দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিভিন্ন বিশেষায়িত খাতে (যেমন-চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি) লেনদেনে ব্যবহৃত মার্চেন্ট ক্যাটাগরি কোডের (এমসিসি) ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত বিশেষ ফি বা চার্জ প্রযোজ্য হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে এনপিএসবির আওতায় পিওএস, বাংলা কিউআর, ই-কমার্স পরিশোধ ব্যবস্থা ব্যবহার করে মার্চেন্ট পেমেন্টে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মার্চেন্ট থেকে আদায়যোগ্য ফি প্রজ্ঞাপনে নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে এসব লেনদেনের কোনো ফি বা সার্ভিস চার্জ গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা যাবে না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
দেশের অভ্যন্তরে পিওএস ব্যবহার করে নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে ইস্যুয়িং ব্যাংক লেনদেন প্রতি সার্ভিস চার্জ সর্বোচ্চ ২০ টাকা অ্যাকোয়ারিং প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে। ইস্যুয়িং ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে উক্ত চার্জ আদায় করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এনপিএসবির আওতায় এক ব্যাংকের গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতি ব্যবহার করে ভিন্ন ব্যাংকে তহবিল স্থানান্তরের ক্ষেত্রে লেনদেন প্রতি সার্ভিস চার্জ হবে সর্বোচ্চ ১০ টাকা। এ চার্জ অরিজিনেটিং ব্যাংক তাদের গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে সরকারি পরিসেবার বিভিন্ন ফি ও চার্জও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।v