দেশে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থপ্রবাহ কমানোর পাশাপাশি পলিসি রেট বা নীতি সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করেছে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান, বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাস, ডেপুটি গভর্নরবৃন্দ, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্রগণ উপস্থিত ছিলেন।
মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পলিসি রেট বা নীতি সুদহার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৮ শতাংশে। এই সুদের হারকে ‘রেপো রেট’ বলা হয়।
রেপো রেট বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করবে, তার সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের দিকে হাঁটছে।
দ্বিতীয়ত, রিভার্স রেপো (বর্তমান নাম স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি বা এসডিএফ) নিম্নসীমার সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। বাজারে উদ্বৃত্ত টাকা থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিভার্স রেপোর মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়।
তৃতীয়ত, নীতি সুদহার করিডরের ঊর্ধ্বসীমা স্পেশাল রেপো বা এসএলএফের (স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি) সুদহার ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় সংকটে পড়া ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে কিছুটা ব্যয় কমবে।
এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী জুনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১০ শতাংশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের মুদ্রানীতিতে যা ১১ শতাংশ ছিল।
এ বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে এবারও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একটি অর্থনৈতিক এবং অ-অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনৈতিক বিষয়গুলো দেখছে। অন্য বিষয়গুলো দেখার বিষয়ে নতুন অর্থমন্ত্রীকে বলা হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে তিনি একটি বৈঠক ডেকেছেন।’
অর্থসংবাদ/এমআই