ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম, মজুত ও সরবরাহের নানা তথ্য নিয়ে দেশে ভিন্নধর্মী ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। এর ফলে বাজার ব্যবস্থা সহজেই তদারকি করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময়সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

সভায় তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানান, বাজার ব্যবস্থাপনা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে স্মার্ট সমাধান দেওয়ার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ শুরু করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এজন্য বাজার নজরদারিতে ভোক্তাবান্ধব হটলাইন ‘৩৩৩’ ও পণ্যের উৎপাদন, মজুত ও বিপণন তথ্যনির্ভর একটি ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই সেবা পাওয়া যাবে বলে আশা করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, পণ্যের উৎপাদন, মজুত, আমদানি ও বিপণনের তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডারে সংরক্ষিত থাকবে, যেটার ড্যাশবোর্ড থাকবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। যেখান থেকে তিনি সরাসরি দেশের যে কোন প্রান্তের দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

এ সময় সংশ্লিষ্টরা জানান, ডলার সংকটের কারণে এলসি জটিলতায় বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকট আছে। অনেক সময় উৎপাদনের ঘাটতি, পণ্যের সহজলভ্যতা নেই- এমন নানা কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এতে বাজারে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠে সাধারণ মানুষের। এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে প্রকৃত তথ্যভিত্তিক বাজার ব্যবস্থাপনা এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগ।

সভায় প্রতিমন্ত্রী জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবে। ফলে একজন সাধারণ ক্রেতা বাজারে গিয়ে কোন পণ্যের দাম অস্বাভাবিক মনে করলে ৩৩৩-তে ফোন দিবে। তখন সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ঐ দোকানের নাম, ঠিকানা জেনে সেখানে অভিযান চালিয়ে পণ্যের দাম যাচাই বাছাই করবে। যাচাই করে যদি বেশি দাম নেওয়ার সত্যতা মেলে তাহলে ঐ দোকানদার বা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সিটি গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, প্রাণ, স্বপ্ন, আগোরা, বিভিন্ন স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।

এ সময় দেশের সবচেয়ে বড় ‘বিটুবি কমার্স’ কোম্পানি শপআপের চিফ অফ স্টাফ মো. জিয়াউল হক ভূঁইয়া বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করা সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে সরকারের নেওয়া এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে দরকার সঠিক তথ্য ও উপাত্ত, যার মাধ্যমে দেশের খাদ্যের উৎপাদন, আমদানি, বিতরণ এবং বিপণনের সঠিক পরিকল্পনা করা সম্ভব। দেশের অন্যতম প্রযুক্তিবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে শপআপ দরকারি সব তথ্য দিয়ে সরকারের এই মহৎ উদ্যোগে সহযোগিতা করতে বদ্ধ পরিকর।

এর বাইরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে খাদ্যপণ্যের আমদানি নির্ভরতা কমানো, কৃষকের অধিকার সুরক্ষা, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সঠিক তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। খাদ্যে বাংলাদেশ স্বনির্ভর হলেই দীর্ঘমেয়াদে ডলার সংকট মোকাবিলা এবং জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত শপআপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মোকাম। মতবিনিময় সভায় সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিনিধিরাও প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ করে সরকারকে সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দেন।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার