মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) নিবন্ধিত অ্যাকাউন্ট সংখ্যা প্রথমবারের মতো ২২ কোটি ছাড়িয়েছে। শুরু থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধিত অ্যাকাউন্ট দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি ৮৬ হাজার। এর মধ্যে সচল ছিল ৮ কোটি ২৫ লাখ হিসাব। আগের মাস অক্টোবর পর্যন্ত ২১ কোটি ৭৭ লাখ অ্যাকাউন্টের মধ্যে সচল ছিল ৮ কোটি ৪ লাখ।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাদাগ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে নিবন্ধিত অ্যাকাউন্ট বেশি হওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। মূলত একই ব্যক্তির একাধিক এমএফএস প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট থাকায় মোট জনসংখ্যার চেয়ে নিবন্ধিত হিসাব বেশি। শুরুর দিকে একই প্রতিষ্ঠানে একাধিক হিসাব খোলা যেত। পরে একই আইডি কার্ডে একই প্রতিষ্ঠানে একাধিক হিসাব খোলার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। যদিও ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খোলার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কার্যক্রমে থাকা ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের সারাদেশে এজেন্ট রয়েছে ১৭ লাখ ২ হাজার। অক্টোবর শেষে ছিল ১৬ লাখ ৭৮ হাজার। নভেম্বর মাসে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। আগের মাসে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। দৈনিক গড় লেনদেন বাড়লেও অক্টোবরে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকিং ভীতির কারণে একটি সময় মানুষ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে লেনদেন করত খুবই কম। তবে ঘরের কাছেই দোকানে এমএফএস এজেন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগের কারণে সে ভীতি কেটেছে। অনেক মানুষ এখন আনুষ্ঠানিক আর্থিক সেবার আওতায় এসেছে। এখন মুহূর্তেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় তাৎক্ষণিক টাকা পাঠানো, বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা দেওয়াসহ বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন হচ্ছে। অবশ্য অনেকে এর অপব্যবহার করছে। এমএফএসের এজেন্টশিপের আড়ালে হুন্ডির টাকা বিতরণে জড়িত থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক হাজার এজেন্টশিপ বাতিল হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হুন্ডির সুবিধাভোগী অনেকের এমএফএস হিসাব জব্দসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপসে মানুষের আর্থিক লেনদেন নিয়মিত বেড়েই চলছে। হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপস ব্যবহার করে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়ে প্রতি মাসের গড় লেনদেন ছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত জুলাই মাসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। আর নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা।
অর্থাৎ মাত্র চার মাসের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে লেনদেন বেড়েছে ৭৯.১৯ শতাংশ। মূলত গত অক্টোবরে হঠাৎ করে লেনদেন দ্বিগুণ হয়ে যায়, নভেম্বরেও তা অব্যাহত রয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই