ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

বৈশ্বিক খাদ্য অপচয়ের অর্ধেকই সৌদি আরবে

পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ১৩০ কোটি টন খাদ্য অপচয় হয় বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির অ্যাডভোকেট শেফ লায়লা ফাথাল্লা। আর জাতিসংঘের ফুড ওয়েস্ট প্রোগ্রাম বলছে, মোট অপচয় হওয়া খাদ্যের অর্ধেকই হয় সৌদি আরবে। যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।

সৌদি আরবের পরিবেশ, পানি ও কৃষিমন্ত্রী আবদুল রহমান বিন আবদুল মোহসেন আল ফাদলি জানান, তার দেশে খাদ্য অপচয়ের কারণে প্রতি বছর চার হাজার কোটি সৌদি রিয়াল ক্ষতি হয়। সৌদি আরবে খাদ্য অপচয়ের হার ৩৩ শতাংশের বেশি। এই গুরুতর সমস্যার সমাধানে জরুরি ও সম্মিলিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।

২০২৩ সালে সৌদি শস্য সংস্থার (সাগো) এক গবেষণায় উঠে আসে, খাদ্য অপচয়ের কারণে সৌদি আরব উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। এই ক্ষতির পরিমাণ বার্ষিক প্রায় চার হাজার কোটি সৌদি রিয়াল বলে ভোক্তা ব্যয়ের ভিত্তিতে অনুমান করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটিতে বছরে ৪০ দশমিক ৬ লাখ টন খাবার নষ্ট হয়। গড়ে একজন সৌদি নাগরিক বছরে প্রায় ১৮৪ কেজি খাবার অপচয় করেন।

সৌদি আরবজুড়ে পরিচালিত গবেষণাটিতে উঠে আসে, দেশটিতে বছরে সবজি অপচয় হয় ৩ লাখ ৩৫ হাজার টনেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে ৩৮ হাজার টন জুচিনি, ২ লাখ ১ হাজার টন আলু, ৮২ হাজার টন শসা, ১ লাখ ১০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং ২ লাখ ৩৪ হাজার টন টমেটো।

৩০ হাজার ৮০০ জন মানুষের নমুনার ভিত্তিতে পরিচালিত এই গবেষণায় প্রধান খাদ্যসামগ্রীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতির তথ্যও উঠে এসেছে। গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর সৌদি আরবে ৯ লাখ ১৭ হাজার টন আটা ও রুটি, ৫ লাখ ৫৭ হাজার টন চাল এবং ২২ হাজার টন ভেড়ার মাংস অপচয় হয়।

এছাড়া, ১৩ হাজার টন উটের মাংস, ৪ লাখ ৪৪ হাজার টন হাঁস-মুরগির মাংস এবং ৪১ হাজার টন অন্যান্য মাংস নষ্ট হয় বলে উঠে আসে গবেষণায়।

এছাড়া দেশটিতে বছরে ছয় লাখ টন ফলেরও অপচয় হয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। অপচয় হওয়া ফলের মধ্যে- খেজুর ১ লাখ ৩৭ হাজার টন, কমলা ৬৯ হাজার টন, আম ১২ হাজার টন এবং তরমুজের পরিমাণ দেড় লাখ টন।

এই পরিসংখ্যান থেকে বছরে সৌদি আরবে খাদ্যদ্রব্য অপচয়ের পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

যেভাবে অপচয় কমানো সম্ভব

জাতিসংঘ প্রতিনিধি শেফ ফাথাল্লা অপচয় রোধে প্রচারণা এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। পরিবারগুলোকে প্রয়োজনের বেশি রান্না না করা, সীমিত খাবার কেনা এবং উদ্বৃত্ত খাবার অভাবগ্রস্তদের দান করার মতো কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি, রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণের সময় নতুন খাবারগুলো পুরোনো খাবারের পেছনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। যাতে পুরোনো খাবারগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে না থাকে।

বারিলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ইকোনমিস্ট ইম্প্যাক্ট পরিচালিত ২০২১ সালের ফুড সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্স (এফএসআই) অনুসারে, কানাডা, ইতালি, জার্মানি, জাপান ও নেদারল্যান্ডস খাদ্য অপচয় রোধ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীতে সেরার কাতারে রয়েছে।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার