ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

নভেম্বরে ১ কোটি ১৭ লাখ কেজি চা উৎপাদন

দেশে নভেম্বরেও চা উৎপাদন বেড়েছে। এ সময়ে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ কেজিতে। এর মধ্য দিয়ে গত জুন-নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসেই উৎপাদন কোটি কেজি ছাড়িয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ১১ মাসে আগের পুরো বছরের চেয়েও বেশি উৎপাদনের খবর জানিয়েছে চা বোর্ড। অনুকূল আবহাওয়া, প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত ও সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ এতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। খাতসংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, ডিসেম্বরের তথ্য যুক্ত হলে উৎপাদনের পরিমাণ ২০২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৩৮ হাজার কেজি। আগের বছর ১২ মাসে উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি চা। অর্থাৎ গত বছর এক মাস হাতে রেখেই ২০২২ সালের চেয়ে ১৫ লাখ ৯ হাজার কেজি বেশি উৎপাদন হয়েছে। ডিসেম্বরের বাগানগুলোর সার্বিক তথ্য পেলে উৎপাদন ১০ কোটি কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে চা বোর্ড।

তথ্যমতে, ২০২৩ সালে দেশে ১৬৮ বাগান ও সমতলের ক্ষুদ্রায়তন চাষ থেকে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কয়েক বছর ধরে লক্ষ্যমাত্রা ১০ কোটি কেজি আশা করলেও কোনো বছরই তা পূরণ হয়নি। এ বছর বর্ষা মৌসুমের পর নভেম্বর-ডিসেম্বরেও উৎপাদন উপযোগি বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা উৎপাদন বেড়েছে।

চা বোর্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের জুন থেকে প্রতি মাসেই এক কোটি কেজির বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে জুনে ১ কোটি ৭ লাখ ১৬ হাজার কেজি, জুলাইয়ে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৪ হাজার, আগস্টে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮৯ হাজার, সেপ্টেম্বরে ১ কোটি ৪২ লাখ ৯৬ হাজার, অক্টোবরে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৯৩ হাজার ও নভেম্বরে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার কেজি চা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৭৭ লাখ ৭৯ হাজার কেজি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আগের বছরের একই মাসের সমপরিমাণ উৎপাদন পেলেই বহুল কাঙ্ক্ষিত ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের মাইলফলক ছুঁবেন দেশের চাষীরা।

বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ‘দেশের চা খাত নানা সংকট পেরিয়ে নতুন সাফল্যের দিকে যাচ্ছে। সরকারি নীতিসহায়তার পাশাপাশি বাগান মালিকদের চেষ্টায় চা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথে রয়েছি আমরা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রফতানি বাজারকে আরো বেশি শক্তিশালী করতে পারবে।’

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুন-অক্টোবর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন হয় বাগানগুলোয়। একসময় প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল থাকলেও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিকল্প সেচ পদ্ধতির কারণে প্রায় সারা বছরই চা উৎপাদন করে বাগানগুলো।

চা বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত বাগান আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও সেচ ব্যবস্থাপনা যুক্ত করলেও দুই-তৃতীয়াংশ বাগানই পিছিয়ে রয়েছে। চা বোর্ড এসব পিছিয়ে পড়া বাগানকে প্রযুক্তির বেশি ব্যবহার, আধুনিক সেচ পদ্ধতির প্রয়োগসহ নানামুখী সহায়তা দিচ্ছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে চা উৎপাদনের ধারা পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার