গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভারতে ভোজ্যতেল আমদানি কমেছে ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমদানি কমেছে ৬ লাখ ২৯ হাজার টন। এ সময় আমদানির পরিমাণ নেমেছে ২৪ লাখ ৫৫ হাজার টনে। ২০২২-২৩ সালের একই সময়ে ৩০ লাখ ৮৪ হাজার টন ভোজ্যতেল কিনেছিল দেশটি।
সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (এসইএ) এ তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অতিবৃষ্টি, বন্যা ও এল নিনোর প্রভাবে অভ্যন্তরীণ ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় এবং দুর্গা পূজার আগে গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারত ব্যাপক হারে ভোজ্যতেল আমদানি বাড়িয়েছিল। সে সময়ের বাড়তি মজুদের কারণে পরবর্তী দুই মাসে আমদানি কমেছে। পাশাপাশি আশঙ্কার চেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনও ভালো ছিল।
ভারতে ভোজ্যতেলের বছর হিসাব করা হয় ১ নভেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এসইএর নির্বাহী পরিচালক বিভি মেহতা বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (নভেম্বর-ডিসেম্বর) সূর্যমুখী তেলের আমদানি বেড়েছে। তবে কমেছে অপরিশোধিত পাম অয়েল (সিপিও) আমদানি।’
২০২২-২৩ ভোজ্যতেল বছরের প্রথম দুই মাসে ৩ লাখ ৫১ হাজার টন সূর্যমুখী তেল আমদানি করেছিল ভারত। চলতি বছরের একই সময়ে উদ্ভিজ্জ তেলটির আমদানি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার টনে। এছাড়া এ বছর ভারত আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অপরিশোধিত সূর্যমুখী কিনেছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার টন, রোমানিয়া থেকে ১ লাখ ৯ হাজার, আর্জেন্টিনা থেকে ৮৫ হাজার ১২ ও ইউক্রেন থেকে ৪২ হাজার ৯৯০ টন অপরিশোধিত সূর্যমুখী কিনেছে দেশটি।
তবে চলতি মৌসুমে ভারতের সয়াবিন তেল আমদানি যথেষ্ট কমেছে। ২০২২-২৩ মৌসুমের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৪ লাখ ৮১ হাজার টন আমদানির তুলনায় এ বছরের একই সময়ে তা নেমেছে ৩ লাখ ২ হাজার টনে। গত দুই মাসে আর্জেন্টিনা থেকে ১ লাখ ৪৮ হাজার ও ব্রাজিল থেকে ১ লাখ ১ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন কিনেছে দেশটি।
অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানিও কমেছে। ২০২২-২৩ মৌসুমের প্রথম দুই মাসে ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টনের বিপরীতে চলতি মৌসুমের একই সময়ে অপরিশোধিত পাম অয়েলের আমদানি নেমেছে ১৩ লাখ ১২ হাজার টনে। বরাবরের মতো ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকেই বেশির ভাগ পাম অয়েলে কিনেছে ভারত। দেশ দুটি থেকে যথাক্রমে ৭ লাখ ১৬ হাজার এবং ৪ লাখ ৪৬ হাজার টন তেলবীজ কিনেছে নয়াদিল্লি।
অন্যদিকে আমদানির পাশাপাশি এ সময় ভোজ্যতেলের মজুদও কমেছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতে ভোজ্যতেলের মজুদ দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৯৭ হাজার টনে। এর মধ্যে বিভিন্ন বন্দরে ৯ লাখ ৪৮ হাজার টন অস্থায়ী মজুদ এবং পাইপলাইনে থাকা ১৯ লাখ ৪৯ হাজার টন মজুদও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এক বছর আগের (২০২২-২৩) একই সময়ে মজুদ ছিল ২৯ লাখ ৬০ হাজার টন।