ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

সাত বছরে প্রথমবারের মতো রফতানি কমলো চীনের

গত বছরে চীনের অর্থনীতি বেশ খারাপ সময় পার করেছে। গাড়ি বাদে দেশটির উৎপাদিত সব পণ্যের চাহিদাই গত বছর কম ছিল। ফলে ২০১৬ সালের পর দেশটির সামগ্রিক বার্ষিক রফতানি প্রথমবারের মতো কমে গেছে।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) প্রকাশিত দেশটির কাস্টমসের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।

বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ বাজারে চীনা পণ্যের চাহিদা ব্যাপক হারে কমে গেছে। কাস্টমসের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে চীন ৩ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম। যেখানে ২০২২ সালেরও দেশটির রফতানি তার আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়েছিল। এর আগে সবশেষ ২০১৬ সালে দেশটির রফতানি এত পরিমাণে পড়ে গিয়েছিল। ওই বছর দেশটির রফতানি কমেছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

তবে বছর ব্যবধানে ডিসেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। ফলে টানা ২ মাসে দেশটির রফতানি বেড়েছে, যা বিশ্ববাজারে দেশটির পণ্যের চাহিদা বাড়ার দিকেই ইঙ্গিত দেয়। নভেম্বরের আগে দেশটির রফতানি টানা ৬ মাস কমেছে।

২০২৩ সালের রাশিয়ার সঙ্গে রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য করেছে চীন। যার আকার ২৪০ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি এবং চীনের মোট বাণিজ্যের ৪ শতাংশ।

বছর ব্যবধানে রফতানির পাশাপাশি কমেছে দেশটির আমদানিও। গত বছর চীনের আমদানি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ঠেকেছে ২ দশমিক ৫৬ ট্রিলিয়ন ডলারে। ফলে গত বছর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির উদ্বৃত্ত দাঁড়ায় ৮২৩ বিলিয়ন ডলারে।

দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৪ সালেও অর্থনীতির মন্দাভাব কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে উঠবে। পণ্যের চাহিতা কম থাকায় চীনের রফতানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বেইজিংয়ের অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমসের জেনারেল অ্যামিনিস্ট্রেশনের মুখপাত্র লিউ ডালিয়াং বলেন, গত বছর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দুর্বল ছিল। পণ্যের চাহিতা কম থাকার চীনের রফতানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে চীনের রফতানি বাজারের বিদ্যমান এ সমস্যা অব্যাহত থাকবে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বরেন, বিশ্বব্যাপী পণ্যের দুর্বল চাহিদা থাকতে পারে।

রফতানি কমার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নাজেহাল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি। ২০২৩ সালে দেশটির ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল। বছর ব্যবধানে ডিসেম্বরে টানা তৃতীয় মাসে দেশটির কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স পড়ে যায়, যা ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে দীর্ঘতম।

গত ১২ জানুয়ারি ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস বলেছে, ডিসেম্বরে চীনের কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) নভেম্বরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে তা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। সামগ্রিকভাবে ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ, যা ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে দুর্বল। ওই সময়ে বিশ্বব্যাপী মন্দা থাকার কারণে সিপিআই শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার