গত এক সপ্তাহ ধরে সূর্যের দেখা নেই দেশের উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে সব। তাই দিনের বেলায়ও যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। সন্ধ্যার পর রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে সারারাত বৃষ্টির মতো টিপ টিপ করে ঝরছে কুয়াশা। সাত দিন ধরে ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা উঠা-নামা করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, রংপুর বিভাগের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সব থেকে কম তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সৈয়দপুরে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি, ডিমলায় ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি, রংপুরে ১৩ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা, চাঁপাইনবাবগঞ্জেও তাপমাত্রা শীতের স্বাভাবিকের তাপমাত্রার চেয়ে অনেক নীচে অবস্থান করছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সামনের আরও কয়েকদিন শীতের তীব্রতা বাড়বে। এ মাসে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের আকাশ মেঘলাসহ ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে কনকনে শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রচণ্ড শীতে গরম কাপড়ের অভাবে তারা সকালে কাজে যেতে পারছে না। সেই সঙ্গে রোজগার না থাকায় কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে পরিবার নিয়ে। খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শিশু হাসপাতালগুলো, সদর হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জানা গেছে, দিনাজপুর শিশু হাসপাতালে গত তিন দিনে তিন শতাধিক শীতজনিত রোগী চিকিৎসা দিয়েছেন।
হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মশিউর রহমান জানিয়েছেন, এমন শীতে শিশুদের গরম কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে। কোনোভাবেই ঠান্ডা লাগানো যাবে না। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় থাকলে শিশুদের রোগবালাই কম হয়। শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত রোগ হলেই হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মশিউর রহমান আরও জানান, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
এছাড়া উত্তরবঙ্গের একমাত্র বিমানবন্দর সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ১১টায় দৃষ্টিসীমা ৮০০ মিটার থাকায় সূচি অনুযায়ী তিনটি ফ্লাইট অবতরণ করেনি।