নতুন মন্ত্রীসভায় পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। মন্ত্রীত্ব, রাজনৈতিক দায়িত্ব, বিসিবির বসগিরি, নিজস্ব কোম্পানির দায়িত্ব- সব চাপের রোষানলে পড়ে যদি পাপন দায়িত্ব ছাড়েন, তবে বিসিবি প্রধান হিসেবে কে দায়িত্ব পালন করবেন এই প্রশ্নে ক্রিকেট পাড়া ও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড়।
দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক এবং নড়াইলের কৃতি সন্তান, এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সুতরাং, মাশরাফি বিন মর্তুজাই পাপনের জায়গায় বোর্ড সভাপতি হতে যাচ্ছেন এমনটাই আশা করছেন ক্রিকেট ভক্তরা। পাপন দায়িত্ব ছাড়লে মাশরাফি কি আসলেই বিসিবি প্রধান হতে পারবেন?
মাশরাফি বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার অনেক বর্নাঢ্য, সফল ও স্বার্থক। মুক্ত ও উদার মনের মিশুক, হাসি-খুশি এবং প্রাণখোলা স্বভাবের মাশরাফি মানুষ হিসেবেই সবার পছন্দের ও প্রিয়। মাঠ ও মাঠের বাইরে তার নেতৃত্ব ক্ষমতাও বরারবরই প্রশংসিত, সমাদৃত।
নেতা হওয়ার সব রকম যোগ্যতা তার আছে। বিশ্বজোড়া পরিচিতিও আছে তার। একটানা প্রায় ৫ বছর জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল দেশে ও বিদেশে সব ফরম্যাটে সবচেয়ে ভাল পারফরম্যান্স করেছে। ফলও হয়েছে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভাল। এছাড়া গত ৫ বছর নিজের নির্বাচনী এলাকায় সাংসদ হিসেবেও প্রচুর কাজকর্ম করেছেন মাশরাফি। উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সফলভাবে পরিচালনার জন্য তাকে নিয়ে অনেকেই নতুন স্বপ্ন দেখছেন।
তাই যারা নাজমুল হাসান পাপন আর বোর্ডের সভাপতি থাকবেন না বলে মনে করছেন, তাদের প্রায় ৯৫-৯৮ ভাগই মাশরাফিকে বোর্ড সভাপতি হিসেবে পেতে চাচ্ছেন। বিশেষ করে ফেসবুকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে মাশরাফি রয়েছেন তালিকার এক নম্বরে।
কিন্তু তিনি বা অন্য কোন ক্রিকেটার বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসলেই বোর্ড সভাপতি হতে পারবেন কি না, বিসিবির সংবিধান ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সেটা সম্ভব কিনা, তা খুঁটিয়ে দেখছেন না কেউই।
বিসিবির কয়েকজন দায়িত্বশীল শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, গঠনতন্ত্র মোতাবেক, এ মুহূর্তে জাতীয় দলে কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব নেয়া সম্ভব নয়।
কারণ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ মুহূর্তে নাজমুল হাসান পাপন যদি বিসিবি প্রধানের পদ ছেড়েও দেন, তাহলে সবার আগে বাকি পরিচালকদের মধ্য থেকে কেউ একজন হবেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট।
নাজমুল হাসান পাপন নিজ থেকে দায়িত্ব ছেড়ে দিলে তবেই না নতুন প্রেসিডেন্ট নিয়োগের প্রশ্ন। অন্যথায় নয়। পাপন তার মেয়াদকালের পুরো সময় সভাপতি পদে আসীন থাকতে চাইলে কারোরই আপাতত বোর্ড প্রধান হওয়ার সুযোগ থাকবে না।
আর পাপন ছেড়ে দিলেও মশরাফি-সাকিব ও জাতীয় তারকাও এখন বোর্ড প্রধান হতে পারবেন না। কারণ তারা কেউই এখন ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর নন। আর বর্তমান বোর্ড পরিচালক পর্ষদের সদস্যও নন।
অগে কাউন্সিলর হতে হবে। নির্বাচন করে জিতে পরিচালক নির্বাচিত হওয়া হলো দ্বিতীয় ধাপ। এরপর বোর্ড সভাপতি হতে গেলে পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। অর্থাৎ বিসিবি সভাপতি হতে হলে প্রথমে বিসিবির কাউন্সিলর, এরপর নির্বাচন করে পরিচালক নির্বাচিত হওয়া হলো দ্বিতীয় ধাপ। বোর্ড প্রধানের পদ পেতে শেষ ধা হলো পরিচালকদের ভোটাভুটিতে নির্বাচিত হওয়া।
অর্থসংবাদ/এমআই