দেশের পুঁজিবাজারে বিদ্যমান ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের দর কমার সর্বনিম্ন সীমা) দ্রুত তুলে স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবিএ’র পরিচালনা পর্ষদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের সাথে সৌজন্য বৈঠককালে ডিএসই চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর হায়দারসহ নব-নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ। ডিএসইর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মো. আফজাল হোসেন এবং রুবাবা দৌলা, মো. শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান, শরিফ আনোয়ার হোসেন, রিচার্ড ডি রোজারিও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, সিপিএ সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, সকল পক্ষের সমন্বয়ের মাধ্যমেই পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে। আজকের ডিএসই অনেক বড়। এ কারণে আমাদের সামনে এখন আরো অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার টেকসই কলাকৌশল নির্ধারণে আপনাদের পরামর্শ আমাদের প্রয়োজন। আপনাদের সাথে নিয়েই সম্মিলিতভাবে বাজারের উন্নয়ন করতে চাই। আপনাদেরকে ছাড়া পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আপনাদের সফল নেতৃত্বের ধারাবাহিকতারই গৌরবময় ফসল আজকের এই ডিএসই। এই মার্কেটটা আসলে আপনাদেরই সৃষ্টি করা মার্কেট, এখানে আপনারাই প্রধান চালিকাশক্তি। আমরা আপনাদেরকে সাথে নিয়েই উন্নয়ন পরিকল্পনা করবো এবং এই প্রতিষ্ঠান, এই মার্কেট এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাবো। এটাই হলো আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, ডিবিএর নতুন পরিচালনা পর্ষদের সাথে আজকের শুরুটা এমনভাবে হোক যেন একে অপরের মাঝে বন্ধন তৈরি হয়৷ বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের বড় ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপিতে বাজার মূলধনের পরিমান বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারলে সেটাই হবে আমাদের বড় অর্জন। নতুন বছরে আমরা একটি স্থিতিশীল, আস্থাশীল, বিনিয়োগবান্ধব পুঁজিবাজার দেখতে পাবো।
ডিবিএর নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম নতুন মানসম্পন্ন কোম্পানি বাজারে আনা, ফ্লোর প্রাইস, কমোডিটিজ মার্কেট, পরামর্শক কমিটি এবং ডিএসই’র গবেষণাকে শক্তিশালী করন, ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং সিসিবিএল’র কার্যক্রম চালুর দাবী জানান। এছাড়াও কনসোলিডেটেড কাস্টমারস অ্যাকাউন্ট হতে প্রাপ্ত সুদ ব্রোকারদের আয় হিসেবে গন্য করার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও অনুরোধ করেন৷
এছাড়াও ডিবিএর পরিচালকবৃন্দ বলেন, আপনাদের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা৷ বর্তমানে লেনদেনের ভলিউম প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না৷ এই ভলিউম বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে৷
এসময় ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু ডিবিএ’র প্রতিনিধিবৃন্দকে আশ্বস্ত করে বলেন, ট্রেকহোল্ডারদের সাথে ডিজিটাল কমিউনিকেশন বাড়ানো সহ প্রয়োজনীয় রুলস রেগুলেশনস পরিবর্তন করার আমরা কাজ করছি। যদিও সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, তবুও ডিএসই এবং ডিবিএ যদি এক সাথে কাজ করে তাহলে এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ট্যাক্স বিষয়ে ডিএসই’র চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আগামি বাজাটের আগেই বিভিন্ন ট্যাক্স নিয়ে এনবিআর-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করব।
তিনি আরও বলেন, উত্থান পতন পুঁজিবাজারের বৈশিষ্ট। এই বিষয়টি আমাদের মেনে নিতে হবে। দেশের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে, সরকারের স্বার্থে এই বাজারকে গতিশীল রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে খুবই তত্পর।