বোরো মৌসুমে চাষের জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রিধান ১০৭ ও ব্রিধান ১০৮ নামের ২টি নতুন জাতের ধানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত গম-৫ নামে একটি গমের জাতের নিবন্ধন এবং ছাড়পত্র দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। এ ছাড়া বোরো মৌসুমে চাষের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ১০টি হাইব্রিড জাতের ধানের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকালে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষিসচিব ও জাতীয় বীজ বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডের ১১১তম সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, ব্রিধান ১০৭ প্রিমিয়াম কোয়ালিটির। গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ৮ দশমিক ২০ টন। জীবনকাল ১৪৩ দিন। চাল লম্বা ও চিকন, ভাত ঝরঝরে এবং সুস্বাদু। এটি দেশে যেসব চিকন চাল আছে তার মধ্যে এক নাম্বার চাল হবে। ব্রিধান ১০৭ এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন ড. আব্দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘ব্রিধান ১০৮ এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ৮ দশমিক ৫০ টন। জীবনকাল ১৪৭ দিন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতীয় জিরাশাইল জাতের ধান চাষ হচ্ছে। ব্রিধান ১০৮ হলো সে ধরনের একটি জাত। এটির ভাত ঝরঝরে। আমরা আশাবাদী এটি ব্রি২৮ এর বিকল্প হবে। উৎপাদন বেশি হবে। জীবনকাল ১৪৭ দিন। এ ধানে পানি সেচ কম লাগবে। তাতে ব্যয় কম হবে। ব্রিধান ১০৮ এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন ড. মাসুদুজ্জামান।
এ ছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ১০টি হাইব্রিড জাতের ধানের মধ্যে ব্রি হাইব্রিড ধান৫ এর চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন হওয়ায় উইনঅল হাইব্রিড ধান১১, আফতাব হাইব্রিড ধান১, আফতাব হাইব্রিড ধান২, সুপ্রীম হাইব্রিড ধান১৭, এসিআই হাইব্রিড ধান১৩ জাতকে অনুমোদন দেওয়া হয়। আর সারা দেশে ৫টি জাত অঞ্চলভিত্তিক চাষাবাদের জন্য সাময়িকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। জাতগুলো হলো-এসিআই এগ্রোলিংক হাইব্রিড ধান১, উইনঅল হাইব্রিড ধান১০, মাহিকা হাইব্রিড ধান৭, এসিআই হাইব্রিড ধান১২ এবং ব্র্যাক এসিআই এগ্রোলিংক হাইব্রিড ধান১৯।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত গম৫ জাতটি আগাম ও উচ্চফলনশীল। গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ২০ থেকে ৫ টনের মতো। জীবনকাল ১০৭ দিন। এটি তাপসহিষ্ণু, ব্লাস্ট ও পাতার মরিচা রোগ প্রতিরোধী।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট, নশিপুর, দিনাজপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো আব্দুল হাকিম বলেন, ‘বিডব্লিউএমআরআই গম৫ চাষ ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও ভালো ফলন হবে। যদিও গম চাষের জন্য গড় তাপমাত্রা দরকার ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ব্লাস্ট ও ৩ ধরনের মরিচা রোগ প্রতিরোধী। পাতা ঝলসানো রোগ প্রতিরোধী। এ গমে ৩৩ শতাংশ জিঙ্ক আছে।
অর্থসংবাদ/এমআই