ইস্পাতের দাম ২০২৩ সালে ঊর্ধ্বমুখী গেলেও চলতি বছর ধাতুটির দাম কমার পূর্বাভাস দিয়েছে ফিচ সলিউশনের গবেষণা সংস্থা বিএমআই। সংস্থাটি জানিয়েছে, চীন ছাড়া অন্যান্য প্রধান বাজারে ধাতুটির দাম নিম্নমুখী থাকায় তা বৈশ্বিক পর্যায়ে গড় দামের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
অস্ট্রেলিয়ান অফিস অব দ্য চিফ ইকোনমিস্ট সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বব্যাপী ইস্পাতের চাহিদা এখনো নিম্নমুখী। বিশেষ করে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোয় উৎপাদন ও নির্মাণকাজ মন্থর হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি চীনের আবাসন খাতে চাহিদা কমে আসায় ইস্পাতের দামে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, কঠোর আর্থিক অবস্থা ও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ইউক্রেনে যুদ্ধ চলমান থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে এবং এতে ইস্পাতের চাহিদা ও দামে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
চলতি বছরের জন্য ইস্পাতের গড় মূল্য পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে বিএমআই। সংস্থাটি আগে প্রতি টনের দাম ৭৮০ ডলারে থাকার পূর্বাভাস দিলেও এখন তা কমিয়ে ৭৪০ ডলার নির্ধারণ করেছে। তবে বাজারসংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা সামনের মাসগুলোয় দামের বর্তমান স্তরের কিছুটা উন্নতি হবে।
নেদারল্যান্ডসের বহুজাতিক আর্থিক পরিষেবা সংস্থা আইএনজির অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিশ্লেষণ শাখা আইএনজি থিঙ্ক। চায়না আয়রন অ্যান্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের (সিআইএসএ) তথ্যের বরাতে আইএনজি থিঙ্ক জানায়, চীনের বড় ইস্পাত কারখানাগুলোয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুদ বেড়েছে, যা নভেম্বরের তুলনায় ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
অস্ট্রেলিয়ান অফিস অব চিফ ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ দিকে চীন সরকার ইস্পাত উৎপাদনে কতটা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা এখনো অনিশ্চিত। অফিস জানায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেয়ায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে ইস্পাতের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে তেমন কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহের বিষয়ে বিএমআই বলছে, উৎপাদন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। অস্ট্রেলিয়ান অফিস অব চিফ ইকোনমিস্টের বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, বিশ্বব্যাপী শিল্প উৎপাদনে প্রত্যাশিত স্থিতিশীল অবস্থার পাশাপাশি নির্মাণকাজে গতি ফিরে আসা এবং প্রণোদনানির্ভর অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প ২০২৪ সালে ইস্পাতে চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করবে।
এছাড়া উৎপাদন বাড়ার বিষয়েও আশা প্রকাশ করেছে বিএমআই। চাহিদার বিষয়ে সংস্থাটির পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাড়ি উৎপাদন খাতে চীনের রফতানি ও অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের পাশাপাশি ভারতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ধাতুটির বাজার পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।
অন্যদিকে চায়না মেটালার্জিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি প্ল্যানিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এমপিআই) গবেষকরা এক পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে চীনে ইস্পাতের চাহিদা ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছর ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যেতে পারে।