ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

পেঁয়াজের দাম কমলেও আদা-রসুনে স্বস্তি নেই

দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে স্বস্তি নেই আদা ও রসুনের বাজারে। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় ও দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় পণ্যটির দাম নিম্নমুখী হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গত দুই-তিনদিনে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দেশী ও ভারতীয় পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক আসতে শুরু করায় দাম কমেছে। নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে পরিবহন ব্যবস্থা অস্বাভাবিক না হলে সামনে পণ্যটির দাম আরো কমবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গতকাল দেশীয় জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৭০-৭২ টাকায়। গত সপ্তাহে একই জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮২-৮৪ টাকা দরে। গত ২৩ ডিসেম্বর মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল মানভেদে ৯০-১০৫ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশীয় মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে অন্তত ৩৫ টাকা। এদিকে গতকাল ভারতীয় জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৯৫-১০০ টাকায়। আগের সপ্তাহে একই জাতের পেঁয়াজের দর ছিল ১১৫-১২০ টাকার মধ্যে। গত ২৩ ডিসেম্বর ভারত থেকে আমদানীকৃত পেঁয়াজের দাম উঠেছিল ১৫০-১৬০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে প্রায় ৬৫ টাকার মতো।

খাতুনগঞ্জে এখন পাবনা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও শিবগঞ্জ থেকে আসা দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহই বেশি রয়েছে। সামনে মাগুরা, রাজশাহীসহ অন্যান্য এলাকার পেঁয়াজ বাজারে দাম আরো কমে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় আমদানীকৃত পেঁয়াজের দামও সামনে আরো কমার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে আদা ও রসুনের বাজার। খাতুনগঞ্জে শনিবার রসুন মানভেদে কেজিপ্রতি ১৯০-২০৫ টাকা ও আদা বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্য দুটির দাম স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ দেশের পাইকারি বাজারগুলোয় আসতে শুরু করেছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ এখনো কিছুটা কম থাকায় দেশীয় পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। ফলে কৃষকরা এখন ভালো দাম পাচ্ছেন। আর আদা ও রসুনের দাম এখনো স্থিতিশীল থাকলেও সামনে এ দুই পণ্যের দামও কমতে পারে।

বাজার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৩০ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। সর্বশেষ রবি মৌসুমে দেশে রেকর্ড ৩৪ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তবে পচনশীল পণ্য হওয়ায় এবং সংরক্ষণের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় ভোক্তা পর্যায়ে এক-চতুর্থাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায় কিংবা শুকিয়ে ওজন কমে যায়। ঘাটতি পূরণে প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে সরকার।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার