ধর্ম ও জীবন
বিয়ের খুতবা কখন, কীভাবে পড়তে হয়?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম সুন্নাত বিয়ে। তিনি বিয়েকে সুন্নাত ঘোষণা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, বিয়ে আমার সুন্নত। অতএব যে আমার সুন্নত পালন থেকে বিরত থাকবে, সে আমার অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (ইবনে মাজাহ)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَ اَنۡکِحُوا الۡاَیَامٰی مِنۡکُمۡ وَ الصّٰلِحِیۡنَ مِنۡ عِبَادِکُمۡ وَ اِمَآئِکُمۡ ؕ اِنۡ یَّکُوۡنُوۡا فُقَرَآءَ یُغۡنِهِمُ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖ ؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ وَ لۡیَسۡتَعۡفِفِ الَّذِیۡنَ لَا یَجِدُوۡنَ نِکَاحًا حَتّٰی یُغۡنِیَهُمُ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖ ؕ
তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা বিয়েতে সামর্থ্য নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে— যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেন। (সূরা নুর, (২৪), আয়াত, ৩২-৩৩)
বিবাহিত জীবনব্যবস্থা যে শুধু কামনা-বাসনা দমন করে তা নয়, জাতীয় সত্তার পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় গুণাবলিকেও দুর্বার গতিতে উজ্জীবিত ও উদ্দীপ্ত করে তোলে। বৈবাহিক যোগসূত্র ছাড়া নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ইসলাম কখনই অনুমতি দেয় না।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবকদের বিয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে নেয়, কেননা তা চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান রক্ষা করে। (বুখারি, হাদিস, ৫০৬৬; মুসলিম, হাদিস, ১৪০০)
বিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ বিয়ের খুতবা। সাক্ষীর উপস্থিতিতে ইজাব-কবুলের আগে বিয়ের খুতবা পড়া সুন্নত। তবে খুতবা পড়া ফরজ কিছু নয়। এজন্য শরীয়ত নির্ধারিত সাক্ষীর উপস্থিতিতে যদি বিশুদ্ধভাবে বিয়ের ইজাব-কবুল হয়ে যায় এবং উপস্থিত সাক্ষীরা ইজাব-কবুলের শব্দগুলো শুনে তাহলে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।
ইজাব-কবুলের আগে খুতবার শব্দগুলো পড়া না হলেও এতে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে না। (ফতোয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ, ৬১২২৫৩ ফতোয়া, ১২৬২-৯৫৩)
এই খুতবা দাঁড়িয়ে দেওয়া সুন্নত। তবে বসে দিলেও কোনো গুনাহ নেই। তাতে বিবাহের কোনো ক্ষতি হবে না। (জামেউল ফাতাওয়া,ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ) তবে অবশ্যই খুতবা আরবীতে দিতে হয়। নিচে বিয়ের আরবি খুতবা, উচ্চারণ ও অর্থসহ তুলে ধরা হলো-
إن الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونؤمن به ونتوكل عليه، ونعوذ بالله من شرور انفسنا ومن سيئات اعمالنا، من يهده الله فلا مضل له ومن يضلل فلا هادي له، واشهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له، واشهد ان سيدنا ومولانا محمد عبده و رسوله، الذي أُرسل الى الناس كافةً بشيرا ونذيرا، وداعيا الى الله بإذنه سراجا وقمرا منيرا، اما بعد
فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم، بسم الله الرحمن الرحيم، يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ (سورة آل عمران : 102)
وقال تعالى: يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ، واحِدَةٍ، وخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا ونِسَاءً واتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ والْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا (سورة النساء:1)
وقال تعالى: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا، يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا (سورة الأحزاب: 70-71)
وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إذا تزوج العبد فقد استكمل نصف الدين فليتق الله في النصف الباقي (صحيح الترغيب والترهيب للامام الالباني رحمه الله)
وقال عليه الصلاة والسلام: النِّكَاحُ من سُنَّتِي فمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَليسَ مِنِّي ، و ايضا قال: تَزَوَّجُوا الوَدُودَ الوَلودَ ، فإني مُكَاثِرٌ بكم الأنبياءَ يومَ القيامةِ (أخرجه أحمد: 13594)
বাংলা উচ্চারণ :
ইন্নাল হামদা লিল্লাহি, নাহমাদুহু ওয়া নাস্তাইনুহু, ওয়া নাস্তাগফিরুহু, ওয়া নাঊযুবিল্লাহি মিন শুরুরি আনফুসিনা, ওয়ামিন সায়্যিআ-তি আ’মালিনা, মাই ইয়াহদিহিল্লাহু, ফালা মুদ্বিল্লালাহ, ওয়া মাই উদলিল ফালা হাদিয়া লাহ।
ওয়া আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ, আল্লাযি উরসিলা ইলান্না-সি কা-ফ্ফাতাম, বাশীরাও ওয়া নাযিরা।
ওয়া দা-ইয়ান ইলাল্লা-হী বিইযনিহী ওয়া সিরাজাও, ওয়া ক্বামারাম মুনীরা। আম্মা বা’দ!
ফাআঊযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজিম। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ‘ইয়া আইয়্যুহাল্লাযিনা আমানুত-তাকুল্লাহা হাক্কা তুকাতিহি ওয়ালা তামুতুন্না ইল্লা ওয়া আনতুম মুসলিমুন।’
ওয়া-ক্বালা তায়ালা: ‘ইয়া আইয়্যুহান্নাসুত-তাকু রাব্বাকুমুল লাযি খালাকাকুম মিন নাফসিও ওয়াহিদাতিও, ওয়া-খালাকা মিনহা যাওজাহা, ওয়া-বাচচা মিনহুমা রিজালান কাসিরাও ওয়া নিসা, ওয়াত-তাকুল্লাহাল্লাযি তাসা আলুনা বিহি, ওয়াল আরহাম, ইন্নাল্লাহা কা-না আলাইকুম রাকিবা।’
ওয়া-ক্বালা তায়ালা: ‘ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানুত তাকুল্লাহা, ওয়া কূ-লূ কাওলান চাদিদা। ইউসলিহ লাকুম আ-মালাকুম ওয়াগ ফির-লাকুম যুনুবাকুম, ওয়ামাই য়ূতিয়িল্লাহা ওয়া রাসূলাহু ফাকাদ ফাযা ফাওযান আযিমা।’
ওয়া-ক্বালা আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম: ‘ইযা তাযাওয়াযাল আবদু, ফাকাদ ইসতাকমালা নিসফাদ দ্বীন‚ ফাল-ইয়াত্তাক্বিল্লাহা ফীন নিসফিল বাক্বী।’ (শুয়াবুল ঈমান)
ওয়া-ক্বালা আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম: ‘আন্নিকাহু মিন সুন্নাতী, ফামান রাগিবা আন সুন্নাতি ফালাইসা মিন্নী।’ ওয়া-ক্বালা আইজান: তাজাওয়্যাজুল ওয়ালু-দাল ওয়াদু-দা, ফা-ইন্নি মুকাচিরুম বিকুমুল আম্বিয়া, ইয়াউমাল কিয়ামাহ।
বাংলা অনুবাদ :
নিশ্চয়ই প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তার প্রশংসা করছি। তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা আমাদের নফসের অকল্যাণ থেকে এবং আমাদের খারাপ কর্মগুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যাকে হেদায়েত করেন তাকে কেউ বিভ্রান্ত করতে পারেনা, আর আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তাকে কেউ হেদায়াত দিতে পারেনা এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই এবং মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে সত্যিকারে ভয় করো এবং মুসলিম না হয়ে তোমরা মৃত্যুবরণ করো না।
হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে একটি প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকেই তার জোড়াকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন। ভয় করো যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট জিজ্ঞাসা করো এবং সতর্ক থাকো রক্ত আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের উপর তিক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন। (সূরা নিসা, আয়াত, ১)
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্য কথা বলো। তিনি তোমাদের কর্মক্ষেত্র ত্রুটি মুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করে। (সূরা আহযাব, আয়াত, ৭০-৭১)
আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বান্দা যখন বিবাহ করে তখন সে তার অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করে নেয়। অতএব তাকে তার অবশিষ্ট অর্ধেক দ্বীনের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা উচিত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
সৌদি পৌঁছেছেন ৪০ হাজার ৬০৮ হজযাত্রী

হজ পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৬০৮ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মোট ১০১টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৮৩ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৬ হাজার ০২৫ হজযাত্রী রয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৮৬ হাজার ৪৪৭টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্প ডেস্ক।
হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, ১০১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৫১টি, সৌদি এয়ারলাইন্সের ৩৪টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ১৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
চলতি বছর হজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও একজন নারী। এরা হলেন— জামালপুর বকশীগঞ্জের হাফেজ উদ্দিন (৭৩), রাজবাড়ীর খলিলুর রহমান, কিশোরগঞ্জের মো. ফরিদুজ্জামান, পঞ্চগড়ের আল হামিদা বানু, ঢাকার মোহাম্মদপুরের মো. শাহজাহান কবীর ও নীলফামারির ফয়েজ উদ্দীন (৭২)।
গত ২৯ এপ্রিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৩৯৮ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশে যাত্রা করে। এর মধ্য দিয়েই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ৩১ মে।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮১ হাজার ৯০০ জন।
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ৭০টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ২৯ এপ্রিল। শেষ হজ ফ্লাইট ৩১ মে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুন, আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুলাই।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সৌদি পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ৫৭০ হজযাত্রী

হজ পালনের উদ্দেশ্যে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ৫৭০ জন হজযাত্রী। এছাড়া চলতি বছর হজে গিয়ে সৌদি আরবে আরও একজন বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট ছয়জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
সর্বশেষ শুক্রবার (১০ মে) মো. ফয়েজ উদ্দিন (৭২) মদিনায় মারা গেছেন। তার বাড়ি নীলফামারী। তিনি সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গিয়েছিলেন।
সোমবার (১২ মে) হজ পোর্টালে পবিত্র হজ-২০২৫ প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে রোববার সকাল পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৫৭০ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজ পালন করবেন।
মোট ৯৬টি হজ ফ্লাইটে ৩৮ হাজার ৫৭০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ৪৭টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ৩৩টি, ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ১৬টি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় ২৯ এপ্রিল। সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ৩১ মে।
হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন। হজযাত্রীদের দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুলাই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
তাওয়াফের সময় যে দোয়া পড়বেন

হজ ও ওমরার সময় পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করা হয়। হজ ছাড়াও নফল তাওয়াফের নিয়ম রয়েছে। পবিত্র কোরআনে একাধিক জায়গায় কাবাঘর তাওয়াফের কথা বলা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর আমার ঘরকে পবিত্র রাখবে তাওয়াফকারী, নামাজ কায়েমকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য।’ (সূরা হজ, আয়াত : ২৬)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে তোমারা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)
তাওয়াফের ফজিলত সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামাজ আদায়ের অনুরূপ। তবে তোমরা এতে (তাওয়াফকালে) কথা বলতে পারো। সুতরাং তাওয়াফকালে যে ব্যক্তি কথা বলে সে যেন ভালো কথা বলে। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৬০)
তাওয়াফের সময় যার যেটা মনে চায় একান্তভাবে আল্লাহ তায়ালার সামনে পেশ করতে পারে। তবে হজরত আতা রহ. বলেন, আবু হুরায়রা রা. আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সা.–কে বলতে শুনেছেন,…যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং কোন কথা না বলে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে
سُبْحَانَ اللّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰه
উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লি-ল্লাহি ওয়ালা ইলাহা- ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ
তার দশটি গুনাহ মুছে যাবে। তার জন্য দশটি নেকী লেখা হবে এবং তার মর্যাদা দশগুণ বর্ধিত করা হবে। আর যে ব্যক্তি তাওয়াফ করে এবং এ অবস্থায় কথা বলে, (উপরোক্ত জিকির করে বা অন্য কোনো মাসনুন জিকির করে।) সে তার দুই পা রহমতের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে; যেমন কারো পা পানিতে ডুবিয়ে রাখে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৫৭)
হাদিসে উত্তম কথা ছাড়া কোনো কথা না বলতে নির্দেশ করা হয়েছে। তাছাড়া যেহেতু বিধানগতভাবে তাওয়াফও আংশিক নামাজের অন্তর্ভুক্ত তাই তাতে উত্তম কথা (জিকির, তিলাওয়াত এবং সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ ছাড়া) অন্য কোনো কাজ ও কথা বলা উচিত নয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৯ হাজার ৫৪৯ জন হজযাত্রী

পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৯ হাজার ৫৪৯ জন হজযাত্রী। তারা মোট ২৩টি ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হজ বুলেটিনের আইটি হেল্প ডেস্ক জানায়, এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস (ঢাকা) ও সৌদি আরবের বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত ৯ হাজার ৫৪৯ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ২ হাজার ৮৯৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেছেন ৬ হাজার ৬৫৬ জন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১০টি ফ্লাইটে সৌদি আরবে গেছেন ৪ হাজার ১৩৬ জন। একই সময়ে, সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ৬টি ফ্লাইটে ২ হাজার ৪৫৩ জন এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ৭টি ফ্লাইটে ২ হাজার ৯৫০ জন হজযাত্রী গন্তব্যে পৌঁছান।
হজ বুলেটিনে আরও জানানো হয়, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে অংশ নেবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৮১ হাজার ৯০০ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১১৮টি প্রাক-হজ ফ্লাইটে ৪৪ হাজার ৩০৭ জন, সাউদিয়া ৮০টি ফ্লাইটে ৩২ হাজার ৭৪০ জন এবং ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইটে ১৩ হাজার ৬৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে।
উল্লেখ্য, ২৯ এপ্রিল থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে এবং এটি চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিন রোজা রাখার বিধান

বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে জুমার দিন নফল রোজা রাখা বা জুমার দিনকে বিশেষভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। ইসলামে জুমার দিনে রোজা রাখার বিশেষ কোনো ফজিলত নেই। বরং নবিজি (সা.) জুমার দিনকে বিশেষভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করতে নিষেধ করেছেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
لاَ تَخْتَصُّوا لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ بِقِيَامٍ مِنْ بَيْنِ اللَّيَالِي وَلاَ تَخُصُّوا يَوْمَ الْجُمُعَةِ بِصِيَامٍ مِنْ بَيْنِ الأَيَّامِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ فِي صَوْمٍ يَصُومُهُ أَحَدُكُمْ
রাতসমূহের মধ্যে তোমরা শুধু জুমার রাতকে নামাজ ও ইবাদতের জন্য নির্ধারন করে নিও না। একইভাবে দিনসমূহের মধ্যে শুধু জুমার দিনকে রোজা রাখার জন্য নির্দিষ্ট করে নিও না। তবে জুমার দিন যদি কারো নিয়মিত রোজা রাখার দিনে পড়ে তাহলে সে রোজা রাখতে পারবে। (সহিহ মুসলিম)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায় জুমার দিনকে বিশেষভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা ঠিক নয়। তবে জুমার দিন রোজা রাখা ইদ বা তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখার মতো নিষিদ্ধ নয়। অন্য কোনো ফজিলতপূর্ণ দিন বা নিয়মিত রোজা রাখার দিন যদি জুমার দিন হয়, তাহলে জুমার দিন রোজা রাখা যেতে পারে। যেমন কারো যদি প্রতি মাসে আইয়ামে বীজের তিনটি রোজা রাখার অভ্যাস থাকে, কোনো মাসে এই তিন দিনের মধ্যে জুমার দিনও পড়ে যায়, তাহলে সে জুমার দিন রোজা রাখতে পারে।
কেউ যদি প্রতি সপ্তাহে নফল রোজা রাখতে চায়, তাহলে সে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতে পারে। আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার তিনি রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। (সুনানে তিরমিজি)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
تُعْرَضُ الْأَعْمَالُ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ
প্রতি বৃহস্পতি ও সোমবার আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার আমলসমূহ পেশ করা হয়। আমি চাই আমার আমলসমূহ যেন রোজা রাখা অবস্থায় পেশ করা হয়। (সুনানে তিরমিজি, সুনানে নাসাঈ)