দেশের উত্তরের কৃষিপ্রধান জেলা ঠাকুরগাঁও। একসময় বিস্তৃত মাঠজুড়ে গম, আলু আর সরিষার খেত দেখা গেলেও বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভুট্টা চাষ। কম খরচে বেশি ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় জেলায় প্রতি বছরই খাদ্যশস্যটির আবাদি জমির পরিমাণ বাড়ছে। ২০১৮-২৩ পর্যন্ত পাঁচ বছরে ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টা চাষ বেড়েছে পাঁচ গুণ। এ সময় শস্যটির আবাদ বেড়েছে ২৫ হাজার ২৬০ হেক্টর।
কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টা আবাদি জমি ছিল ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর। এরপর প্রায় প্রতি বছরই শস্যটির আবাদি জমি বেড়েছে। ঠিক পরের বছরই (২০১৯-২০) ভুট্টা আবাদ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ১৮০ হেক্টরে। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে সামান্য কমে ১৪ হাজার ৬০০ হেক্টরে দাঁড়ালেও পরের বছরগুলোয় উল্লম্ফন ঘটে ভুট্টা চাষে।
২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ হাজার ৫৬৪ হেক্টর ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন জেলার কৃষক। এদিকে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জেলায় ৩৮ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, আগে যেসব জমিতে গম চাষ হতো এখন নানা ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার কারণে সেসব জমিতে ভুট্টা আবাদ বাড়ছে। কম খরচ ও পরিশ্রম, বেশি ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
জেলার সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের কৃষক লতিফুর রহমান বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমি। দুই বছর আগেও এ জমিগুলোয় গম আবাদ করতাম।৷ কিন্তু গমের বীজ ও সার নিতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সে কারণে পাশের এক ভাইয়ের পরামর্শে ভুট্টা আবাদ শুরু করেছি। গত বছর ভালো ফলন ও দাম পেয়েছি। এবারো ভালো দাম পাব বলে আশা করছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দিন দিন বেড়ে চলছে ভুট্টা আবাদ। ফসলটি জেলার কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।৷ আমাদের পক্ষ থেকেও প্রণোদনাসহ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।